Sat, Sep 9 2017 - 6:40:43 PM +06

ইন্টারনেটের গতি বাড়বে সাত গুণ !


News Image

হলি টাইমস রিপোর্ট :

কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হলে দেশে ইন্টারনেটের গতি সাত গুণ বেড়ে যাবে। শুধু ইন্টারনেটের গতি নয়, বিশ্বের সঙ্গে দেশের একটি নিবিড় বন্ধনও তৈরি হবে।
 

 

এছাড়া গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর তথ্য-প্রযুক্তির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে।

আগামীকাল রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে সাবমেরিন ক্যাবল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন সব প্রস্তুতি নিয়েছে।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন জানান, উদ্বোধনের দিন থেকে ২০০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ পর্যায়ক্রমে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএসে উন্নীত হবে। কক্সবাজারে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের চেয়ে দ্বিতীয় স্টেশন সাত গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি উদ্বোধনের পর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্কে ভাসবে গোটা দেশ। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল টেলিযোগাযোগ বিভাগের আঞ্চলিক প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটি। ক্রমশই এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কক্সবাজারে একটি মাত্র সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে দেশে ইন্টারনেট সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু এ সাবমেরিন স্টেশনটির ক্যাবল লাইন কাটা পড়লে বিএসসিসিএলের কাছে নেটওয়ার্ক সরবরাহের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় গ্রাহকদের বিপাকে পড়তে হয়।

বিশেষ করে কক্সবাজারের নির্মিত ২০০ জিবিপিএস ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম সাবমেরিন স্টেশনটির লাইফ টাইম শেষে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমেরিন ক্যাবল স্টেশন থেকে গোটা দেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সরবরাহ করা যাবে। ফলে দ্রুতগতির নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটসহ নানা সেবা পাবে গ্রাহক।

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মো. মশিউর রহমান জানান, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ল্যান্ডিং স্টেশনের বৈদেশিক সংযোগ স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। স্টেশনটি উদ্বোধনের পর সর্বোচ্চ ১৫০০ জিবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ সুবিধাসহ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।

রোববার সকাল ১০টায় কুয়াকাটা সংলগ্ন লতাচাপলী ইউনিয়নের মাইটভাঙ্গা এলাকায় নির্মিত সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন ভবনের হলরুমে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হবে।

সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, মাইটভাঙ্গা গ্রামে ২০১৩ সালের শেষের দিকে ১০ একর জমির ওপর ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মিত হয়। প্রকল্পটির কাজ শেষ করার পর ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হয়।

সাগরের নিচ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল লাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়।

ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে বাংলাদেশে আসা সঞ্চালন লাইন কুয়াকাটার ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজ চলতি বছরের জানুয়ারিতে সংযোগ স্থাপন করা হয়। মার্চ থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়।