Thu, Nov 16 2017 - 1:58:49 PM +06

ঢাকা লিট ফেস্ট: শুধুই কি বাংলাদেশের এলিটদের উৎসব?


News Image

হলি টাইমস রিপোর্ট :

ঢাকায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব - ঢাকা লিট ফেস্ট।আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারে তিনদিনব্যাপী উৎসবে অংশ নিচ্ছেন ২৪টি দেশের দু'শোর বেশি লেখক ও শিল্পী।২০১২ সালে প্রথম শুরু হয়েছিল এই উৎসব। উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের লেখকদের সাথে অন্যান্য দেশের লেখকদের জানাশোনার সুযোগ করে দেয়া এবং বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের সাহিত্যকে তুলে ধরা।

ঢাকা লিট ফেস্টের অন্যতম আয়োজক কাজী আনিস আহমেদের সাথে উৎসবের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেন। আলাপচারিতায় কাজী আনিস আহমেদ বলেছেন উৎসবের নানান দিক - আর এ উৎসব নিয়ে সমালোচনার জবাবে তাঁর বক্তব্যও তুলে ধরেছেন।

এবারের উৎসবের উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ কী?

"সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কবি আদোনিস, ৮৬ বছর বয়সী এই সাহিত্যিককে ফাদার অব মডার্ন অ্যারাবিক পোয়েট্রি বলা হয় - তিনি থাকছেন"।

"এছাড়া অন্যান্য লেখকদের মধ্যে থাকছেন লিওনেল শ্রাইভার, এসগার ফ্রয়েড এবং বুকার জয়ী বেন ওকরি। এছাড়াও থাকছেন হলিউডের অস্কার জয়ী অভিনেত্রী টিল্ডার সুইন্টন, যার কিনা সাহিত্যের সাথে যোগাযোগ আছে"।

"দক্ষিণ এশিয়ার একটি সাহিত্য সম্মাননা ডিএসডি পুরষ্কার দেয়া হবে লিট ফেস্টের শেষদিন।

এছাড়াও শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে উৎসবে - ছড়া গানে মেতে থাকতে পারবে শিশুরা"।

বেশ কয়েকবছর ধরে লিট ফেস্টের আয়োজন হচ্ছে, বাংলাদেশে যারা সাহিত্যচর্চা করছেন তাদের মধ্যে বিশ্বসাহিত্যের আদানপ্রদান বাড়ানো বা লেনদেন বাড়ানোএ উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য, সেটা কতটা সফল হচ্ছে?

আনিস আহমেদ বলেন, "বেশ ভালো ধরনের মিথস্ক্রিয়ার শুরুটা দেখা যাচ্ছে"।

"বিশ্বের বাইরে যারা বাংলাদেশের সাহিত্য নিয়ে ভাবেনি, তারা ভাবতে শিখেছে। লাইব্রেরি অব বাংলাদেশ আমরা শুরু করেছিলাম, যা আমরা অনুবাদ করেছি তা ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্সে যাচ্ছে।

"এর ফলে বাংলাদেশের লেখা সম্পর্কে বাইরে আলোচনা হচ্ছে, কৌতুহল-উদ্দীপনা শুরু হয়েছে - এক সময় যা ছিলো না"।

ঢাকার অনেক তরুণ-লেখকেমধ্যে এরকম একটা সমালোচনা আছে যে লিট ফেস্টিভ্যাল নামে যা হচ্ছে, তা আসলে এলিট লোকজনের সাহিত্যচর্চা। বাংলাদেশের যে ব্যাপক জনগোষ্ঠী তাদেরকে অতটা সম্পৃক্ত করতে পারেনি আয়োজকেরা, এর জবাবে কী বলবেন?

"আমার কাছে এটা আদৌ লজিক্যাল সমালোচনা বলে মনে হয় না। আমাদের ১৬ কোটির দেশে সমাদৃত লেখক যারা আছেন যেমন শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক - তাদের কি ১৬ লক্ষ বই বিক্রি হতো? জনগণ কি প্রচলিত সাহিত্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পেরেছেন? এখানে যেকোনো সাহিত্য চর্চা কি বিকশিত হয়েছে?

"যেখানে নিউইয়র্কে ইন্টেলেকচুয়াল পত্রিকা এক মিলিয়নের ওপর বিক্রি হয়, বাংলাদেশে কালি ও কলমের মতো পত্রিকা দুই-চার হাজারের বেশি বিক্রি হয়েছে?" - প্রশ্ন রাখেন আনিস আহমেদ।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠীর সাহিত্যের ওপর আগ্রহ ছিল। সেখানে আমাদের ফেস্টে গত বছর ২৪ হাজার মানুষ এসেছেন, সম্পৃক্ত হয়েছেন। এবারো আমরা ৩০ হাজারের মতো মানুষ আশা করছি।

"পাবলিশাররা বলছেন মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, বই বিক্রি বাড়ছে। তারপরও যদি বলা হয় যে এটা শুধু এলিটদের, তাহলে তো আর কিছু বলার থাকে না"।খবর বিবিসির