Sun, Jan 7 2018 - 7:29:23 PM +06

বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় অবাস্তব


News Image

হলি টাইমস রিপোর্ট :
১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে যে ১১৬ অনুচ্ছেদ ছিল সেখানে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে অবস্থা বিদ্যমান আছে সেটাই বিচার বিভাগের জন্য শ্রেয়। বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় করার বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও, কোন গণতান্ত্রিক দেশে, কোন অগণতান্ত্রিক দেশে বা ১৯৩টি দেশের মধ্যে কোথাও বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় নেই। তাই এ মুহুর্তে এটা ভাবা অবাস্তব। তবে হ্যাঁ ভবিষ্যতে হবে কি হবে না সেটা বলা যাবে না। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয়ের কথা যেটা বলা হচ্ছে, সেখানে আমি দুটো কথা বলতে চাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবাবে হত্যা করার পরে এবং তেসরা নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পরে বাংলাদেশে একটা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। সেটা কিন্তু ২১ বছর বিদ্যমান ছিল। বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এই হত্যার ব্যাপারে ২১ বছরে কিন্তু কোন মামলা হয় নাই। তখন কিন্তু কেউ সুয়োমেটো রুল বা পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশ করে নাই।'
আজ রোববার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য ২১তম জুডিসিয়াল এডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে বাইরে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ষোড়শ সংশোধনী রিভিউয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, রিভিউ করার অধিকার সংবিধান কিন্তু প্রত্যেকেই দিয়েছে। সেখানে সরকারকে কিন্তু বাদ দেয়নি। সেই অধিকার নিয়ে রিভিউ করা হয়েছে। এখন আপিল বিভাগ যখন মনে করবেন এটার শুনানী করবেন। তারা তারিখ দিলেই শুনানী হবে। তিনি বলেন, সরকারও চায় এই বিতর্কের অবসান হোক, এই মামলা নিরসন হোক।
শৃঙ্খলা বিধি করার বিষয়ে তিনি বলেন, শৃঙ্খলা বিধি করার ব্যাপারে সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে ঠিক সেভাবেই তা করা হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার করেই এই শৃঙ্খলা বিধি করা হয়েছে। বিধিটি যখন আপিল বিভাগ গ্রহণ করেছেন, তখন তারা কিন্তু এ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি তাঁর আদালতের যে মতামত তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন। এ সময় গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, সমালোচকদের বক্তব্য নিয়ে তার কিছু করতে হবে বলে তিনি মনে করেন না। এ সময় শৃঙ্খলা বিধিটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ভাবে করা হয়েছে এবং তা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ মামলা বিচারাধীন আছে। এ মামলার জট কমিয়ে আনা বিচার বিভাগ ও সরকারের জন্য অন্যতম চ্যালে”। তাই এ চ্যালে” মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেওয়ানী কার্যবিধি এবং অর্থঋণ আদালত আইন সংশোধনের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির বিধান অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির সহায়ক আইন করা হয়েছে। বিচার বিভাগের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এবং শত বছরের পুরোনো আইন ও বিধিগুলো সংস্কার করে বিচার ব্যবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, মামলা জট কমিয়ে আনার চ্যালে” মোকাবেলায় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে বিচারকদেরও  আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
ন্যায় বিচারের দ্বার যেন সর্বস্তরের বিচারপ্রার্থীদের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং কেবল বিত্তবানদের জন্য যেন সীমাবদ্ধ না থাকে, সে বিষয়ে তিনি বিচারকদের সজাগ থাকার আহবান জানান।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।