হলি টাইমস রিপোর্ট :
বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত নগরী কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা চাঙ্গা করে ঈদের ছুটি। চাঁদরাত থেকে অন্তত অনুমিত ছুটির দিন পর্যন্ত চলমান থাকে এ ব্যবসা। কিন্তু এবার ওই চিত্রের ব্যতিক্রম ঘটতে পারে এমনটাই মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস, অতিবৃষ্টি, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভ্রমণ পিপাসুরা বেড়াতে আসছে না।
প্রকৃতিক দূর্যোগের আগে ঈদ ও সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে নয়দিন ছুটি হওয়ার প্রচারণা পাবার পর সৈকত নগরীর বেশ কিছু হোটেল সপ্তাহের জন্য আগাম বুকিং হয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পূর্বের নিয়মে তিনদিন ছুটি ও বর্ষার তীব্রতা থাকায় অনেক হোটেলে বুকিং বাতিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের এক সপ্তাহ আগেই হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজের প্রায় ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে যেত এটা বিগত এক দশকের চিত্র। এবারও একি পথে চলছিল সব। কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ছুটি কমে যাওয়ায় ব্যবসা আশানুরূপ হবে না বলে মনে হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন।
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ৫০ ভাগ কক্ষও এবারের ঈদের জন্য বুকিং হয়নি। তাই অন্য বছরের মতো ব্যবসাটা জমবে না।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস’র মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সেলিম সালেক জানান, নয়দিন ছুটির সম্ভাবনা থাকায় অনেকে বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করেন। কিন্তু সময় কমে যাওয়ায় এখন বাতিল করেছেন অনেকে। ঈদটা পড়েছে বর্ষায়।
অতিবৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে অনেকে এবার ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে আসছে না বলে মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ৫০ ভাগও বুকিং হয় কিনা সন্দেহ রয়েছে।
তবে ব্যবসা ভালো হতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়ে হোটেল কক্স টুডে‘র সহকারী ব্যবস্থাপক অংছা ছিং চাক জানান, রোববার পর্যন্ত ৬৫ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে। বুকিং ছাড়াও অনেকে আসতে পারেন বলে মনে করছেন তিনি।
কলাতলীর সী-নাইট হোটেলের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ সাজানো হয়েছে। সঙ্গে বুকিংসহ নানা ক্ষেত্রে নানা সুবিধা অফার করা হচ্ছে।
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির তথ্য মতে, পর্যটনের খণ্ড মৌসুম হিসেবে ঈদুল ফিতর একটি বড় অংশ। এই সময়ের ব্যবসা নিয়ে সবাই অনেক আশায় থাকেন। বিগত কয়েক বছরে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যবসা মোটামুটি ভালো গেছে। কিন্তু এবার সেভাবে জমে উঠবে না। ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের অনেকে কিছুটা হতাশ।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার এইচ এম রায়হান কাজেমী বলেন, পর্যটক আসুক না আসুক পর্যটন এলাকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের ১২১ সদস্য টেকনাফ, ইনানী, হিমছড়ি ও কক্সাবাজার সমুদ্র সৈকতে নিয়োজিত রয়েছে। লাবণী পয়েন্টে বিচবাইক নিয়ে স্পেশাল টিম, সিভিল টিম টহলে থাকবে।
এছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণসহ ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে হটলাইন। ইতোমধ্যে হটলাইনের জরুরি নম্বর সম্বলিত ব্যনার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাটানো হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশসাক মো. আলী হোসেন বলেন, পর্যটন শহর হিসেবে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ঈদ মোবারক জানাতে আমরা প্রস্তুত। হয়রানি পরিহার করে সেবার মনোভাবে দায়িত্বপালনে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও চাকুরেদের ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জেলা প্রশাসনের বিশেষ টিম মাঠে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।