Contact For add

Thu, Sep 7 2017 - 2:25:00 PM +06 প্রচ্ছদ >> খেলাধুলা

Now Mushfiq's departureএবার মুশফিকের বিদায়

এবার মুশফিকের বিদায়

হলি টাইমস রিপোর্ট :

একই ভঙ্গিতে আউট হয়েছিলেন তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ দলের ওপেনার যখন রান পাচ্ছিলেন না, তখন কিছুটা অধৈয্য হয়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়েছিলেন; কিন্তু সাব্বিরের কী সমস্যা ছিল? তিনি তো রান পাচ্ছিলেন। মুশফিকের সঙ্গে ৫৪ রানের একটি দারুণ জুটিও গড়ে ফেলেছিলেন। টেস্ট মেজাজ অনেকটাই ধরে ফেলেছিলেন। এমন সময়েই কি না মেজাজ হারিয়ে ফেললেন! নাথান লিওনের মত বোলারকে উইকেট ছেড়ে এগিয়ে এসে খেলতে গেলেন!

ফল যা হবার তাই হলো। তামিমের পরিণতিই বরণ করলেন সাব্বির। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল চলে গেলো উইকেটের পেছনে ম্যাথ্যু ওয়েডের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাম্প ভেঙে দিলেন ওয়েড। সাব্বির সুযোগই পেলেন না ক্রিজে ফিরতে। তবুও আম্পায়ার টিভি আম্পায়ারের সহযোগিতা নিলেন। তাতেই দেখা গেলো, সাব্বির পরিস্কার স্ট্যাম্পড। ৫৯ বলে ২৪ রান করে আউট হয়ে গেলেন সাব্বির। দলীয় রান তখন ৯৭।

সাব্বির আউট হওয়ার পর সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামেন মুমিনুল হক। জুটি বাধলেন দুই লিটলম্যান। মনে হচ্ছিল জুটিটা বেশ জমবে; কিন্তু সব আশায় গুড়ে বালি। খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মুশফিকুর রহীম। ৩২ রানের জুটি গড়ার পর কামিন্সের বলে উইকেট দিলেন মুশফিক। কামিন্সের অফ সাইডে করা সোজা লেন্থের বলটিতে আলতো করে ব্যাটের ছোঁয়া লাগান মুশফিক। ব্যাট ছুঁয়ে গিয়ে উইকেটের পেছনে ওয়েডের হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ১০৩ বল খেলে ৩১ রান করেন মুশফিক।

এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৫৫.১ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৯। লিড ৬৮ রানের। মুমিনুল উইকেটে রয়েছেন ২৪ রানে এবং নতুন ব্যাটসম্যান মিরাজ রয়েছেন ৫ রানে।

সাব্বির আউট হওয়ার আগেই লিড নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। নাথান লিওন, স্টিভেন ও’কিফ এবং অ্যাস্টন অ্যাগার যেভাবে একের পর এক উইকেট তুলে নিতে শুরু করেছিলেন, তাতে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল সবাই- অস্ট্রেলিয়ার ৭২ রানের লিড টপকাতে পারবে তো মুশফিকের দল! শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হলো কেবল মুশফিক আর সাব্বিরের দৃঢ়তায়। অস্ট্রেলিয়ার ৭২ রান টপকে দ্বিতীয় ইনিংসে লিড নেয় বাংলাদেশ। স্টিভেন ও’কিফকে বাউন্ডারি মেরেই বাংলাদেশকে লিড এনে দেন সাব্বির।

তামিম, সৌম্য, ইমরুল, সাকিবের সঙ্গে চার নম্বরে নামা নাসির হোসেনও দলকে বিপর্যয়ে ফেলে দ্রুত আউট হয়ে যান। ৪৩ রানেই পড়ে বাংলাদেশের ৫ উইকেট। শঙ্কাটা বেড়ে গিয়েছিল এ কারণেই সবচেয়ে বেশি। এরই মধ্যে স্টিভেন ও’কিফের বলে একবার সাব্বিরকেও আউট ঘোষণা দিয়ে আঙ্গুল তুলে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ থাকার কারণে রক্ষা। বেঁচে যান সাব্বির।

এর আগে একের পর এক ভুলের খেসারত দিয়ে আউট হয়েছেন বাংলাদেশ দলের ৫ ব্যাটসম্যান। সৌম্য, তামিম, ইমরুল, সাকিব এবং নাসির। সৌম্য ভুল করেছিলেন স্ট্যাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। তামিম ইকবাল অধৈয্য হয়ে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে হলেন স্প্যাম্পড।

ইমরুল ঠিক মত শটই খেলতে পারলেন না। ইচ্ছা করেই যেন ক্যাচটা দিলেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে। খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিলেন সাকিব আল হাসান। স্টিভেন ও’কিফের বলে অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাসির হোসেনও।

দিনের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে আর এগুতে না দিয়ে অলআউট করে দিলো বাংলাদেশ। দিনের তৃতীয় ওভারেই বলতে গেলে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামতে হলো বাংলাদেশকে। শুরুতেই দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার মুখোমুখি হলেন নাথান লিওনের। প্রথম ইনিংসে যিনি নিয়েছিলেন ৭ উইকেট। পরের ওভারেই আক্রমণের জন্য পেসার প্যাট কামিন্সের হাতে বল তুলে দিলেন অসি স্কিপার স্টিভেন স্মিথ।

প্রথম চারটি ওভার ভালো ভালোই কাটিয়ে দিলেন দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারে পেসার প্যাট কামিন্সের বলে এসেই বিপদটা বাড়িয়ে দিলেন সৌম্য সরকার। ওভারের ৫ম বলে এসে অপ্রয়োজনে কামিন্সকে খোঁচা দিতে গেলেন সৌম্য সরকার। অফ স্ট্যাম্পের ওপর পড়ে বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে ইচ্ছা করেই যেন বলে খোঁচাটা দিলেন সৌম্য। প্রথম স্লিপেই ধরা পড়লেন ম্যাট রেনশর হাতে। দলীয় ১১ রানেই পড়ল প্রথম উইকেট। সৌম্য আউট হলেন ৯ রান করে।

এরপর যেন রান করতে না পারায় পুরোপুরি অধৈয্য হয়ে পড়েছিলেন তামিম ইকবাল। ৩৮ বল খেলে করলেন মাত্র ১২ রান। এ কারণেই হয়তো নাথান লিওনের বলে ভুলটা করে বসলেন তিনি।

একেবারে ক্রিজ ছেড়ে দিয়ে এসে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গেলেন লিওনকে। কিন্তু বলের লাইন মিস করলেন। বল চলে গেলো উইকেটের পেছনে ম্যাথ্যু ওয়েডের হাতে। দ্রুত ব্যাট ফেলেও লাভ হলো না। তার আগেই উইকেট ভেঙে দিলেন ওয়েড। দলকে আরও বেশি বিপদে ফেলে আউট হয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। দলীয় রান ছিল তখন ৩২।

সেই ভুলের ধারাবাহিকতা চলল ইমরুলের ক্ষেত্রেও। একের পর এক সুযোগ পেয়েও সেটাকে কাজে লাগাতে পারছেন না তিনি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫ রান করে আউট হয়ে গেলেন তিনি। দলকে রেখে গেলেন দারুণ বিপর্যয়ের মধ্যে। নাথান লিওনের স্পিন ঘূর্ণির সামনে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন তিনি।

লিওনের বলে খুবই বাজে একটি শট খেললেন ইমরুল। শটে কোনো ক্যারিশমা ছিল না। কোনো পাওয়ার ছিল না। ইচ্ছা করেই যেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচটা তুলে দিলেন তিনি। ৩৭ রানে পড়ল তৃতীয় উইকেট।

ইমরুল কায়েসের পর পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন সাকিব আল হাসান। অনেক আশা-ভরসা ছিল তাকে নিয়ে। কিন্তু সেই অফ স্পিনার লিওনের সামনে বাম হাতি ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান টিকতে পারলেন না। বিভ্রান্ত হলেন। উইকেট বিলিয়ে দিলেন। লেগ মিডলে পড়ে বল হালকা বেরিয়ে যাচ্ছিল। তখনই ব্যাট পেতে দেন সাকিব। বল চলে গেলো প্রথম স্লিপে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে। ২ রান করেই বিদায় নিলেন সাকিব। ৩৯ রানে গেলো চতুর্থ উইকেট।

৪৩ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন নাসির হোসেন। ২০তম ওভারে স্টিভেন ও’কিফের চতুর্থ বলটি না খেলে ছেড়ে দিলেও পারতেন নাসির। কিন্তু তিনি এক পা এগিয়ে এনে খেলতে যান। ব্যাটে-বলে ঠিকমত হলো না। কানায় লেগে চলে গেলো প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো স্টিভেন স্মিথের হাতে। দলকে চরম বিপর্যয়ে ফেলে রেখে বিদায় নেন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া নাসিরও।



Comments

Place for Advertizement
Add