Contact For add

Sat, Sep 9 2017 - 2:11:01 PM +06 প্রচ্ছদ >> বিনোদন

Anabel again, the world is afraid of the doll again!আবার অ্যানাবেল, বিশ্ব জুড়ে আবার পুতুল আতঙ্ক!

আবার অ্যানাবেল, বিশ্ব জুড়ে আবার পুতুল আতঙ্ক!

হলি টাইমস রিপোর্ট :

প্রথমে একটি স্থানীয় সংবাদপত্রে খবরটি প্রকাশিত হয়। দিন কয়েক পর আন্তর্জাতিক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে খবরটা। গত ২২ অগস্ট ব্রাজিলের একটি সিনেমা হলে ‘অ্যানাবেল ক্রিয়েশন’ দেখার পর এক মহিলা নাকি অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করেন। ডেইলি মেল-এর খবর অনুযায়ী, নাইট শো দেখে বেরিয়ে ওই মহিলা হঠাৎ মাটিতে শুয়ে পড়েন। কাঁদতে কাঁদতে নিজেকেই মারতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

সপ্তাহখানেক আগে কলকাতাতেও, বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল সাউথ পয়েন্টের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র সৃজন চৌধুরীর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এই ঘটনাকে আত্মহত্যাই বলেছে। কিন্তু সেদিনই সৃজনের দিদিমা বার বার দাবি করেন, মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে। মা শুক্লাও তা সমর্থন করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, লুকিয়ে একটি ইংরেজি ভূতের সিনেমা দেখতে গিয়েছিল সৃজন। ‘অ্যানাবেল’। তা দেখার পরেই নাকি বদলে যায় তার আচরণ।অদ্ভুত ভাবে অ্যানাবেলকে ঘিরে আবার শুরু হয়েছে চর্চা। ছবি দেখার পরই ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। উঠছে সেই পুরনো আলোচনা। আলোচনাটা ভূতকেন্দ্রিক-আধিভৌতিক বলা যেতে পারে। অ্যানাবেল হয়ে সেই আলোচনার ভূত-ভবিষ্যত্ সবেরই চর্চা হচ্ছে। অর্থাৎ ভূতের অতীত, ভূতের ভবিষ্যৎ, আর কী!

‘অ্যানাবেল ক্রিয়েশন’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি— সংগৃহীত।

কিন্তু ‘অ্যানাবেল’ নিয়ে হঠাৎ এ ভাবে নয়া আতঙ্কে প্রশ্ন উঠছে। অতএব চর্চাটা ফিরে যাচ্ছে প্রায় ৪৭ বছর আগে। অ্যানাবেল আতঙ্কের গোড়ার দিকে।

১৯৭০-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে ‘অ্যানাবেল’-এর জন্ম। শুরু থেকেই নানা ‘অশরীরী কাণ্ড’ এই পুতুলকে ঘিরে। ফলে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে যায়, এটি নাকি একটি পৈশাচিক পুতুল।

নার্সিং পড়ুয়া মেয়ে ডোনাকে জন্মদিনে একটি পুতুল উপহার দিয়েছিলেন তাঁর মা। সেই পুতুলটির নাম ছিল ‘অ্যানাবেল’। ডোনার হস্টেলের রুমমেট ছিল এনজি। প্রথম দেখাতে পুতুলটিকে অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি কারও। কিন্তু কয়েক দিন পর থেকেই নাকি ধরা পড়তে শুরু করে কিছু অদ্ভুত ঘটনা।

ডোনা কলেজে যাওয়ার আগে বিছানায় রেখে যেত অ্যানাবেলকে। বাড়ি ফিরে দেখত সেটি সোফায়। কিন্তু এনজিকে জিজ্ঞেস করায় সে অবাক হয়ে জানাত, অ্যানাবেলকে সে সরিয়ে রাখেনি।

পর পর এমন ঘটতে থাকে। অ্যানাবেলকে রেখে যাওয়া হয় এক জায়গায়, ফিরে এসে দেখা যায় সে অন্য জায়গায় রয়েছে। এক দিন পরামর্শ করে ডোনা ও এনজি দু’জনেই পুতুলটিকে সোফার উপরে বসিয়ে রেখে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু সেদিনও বাড়ি ফিরে পুতুলটিকে অন্য জায়গায় পড়ে থাকতে দেখে ডোনারা।

পাদ্রী এড ও লরেন ওয়ারেনের বাড়ির মিউজিয়ামে বাক্স বন্দি আসল ‘অ্যানাবেল’। ছবি— সংগৃহীত।

তালাবন্ধ ঘরেও কী ভাবে ঘটল এমন ঘটনা? এর পরই আতঙ্ক হয়ে ওঠে ‘অ্যানাবেল’।শুধু ‘অ্যানাবেল’ই না, ‘দ্য এগজরসিস্ট’, ‘কনজিউরিং’— এই হরর ছবিগুলির সব গল্পও নাকি সত্য ঘটনা অবলম্বনে। আর এই ছবিগুলিতে দেখানো হয়, সেই পৈশাচিক পুতুল একের পর এক খুন করে। এই ফিল্ম দেখে ঘটেছে বহু অশরীরী ঘটনাও। বিভিন্ন দেশে সেই খবর একসময় শিরোনামে উঠে এসেছিল।

কিন্তু এর সত্য মিথ্যা? যুক্তি বা বিশ্বাস? কোথায় দাঁড়িয়ে আমরা? এর বিশদে যেতে চান না সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ভূত রয়েছে। বেশ কয়েক বার ভৌতিক উপলব্ধি হয়েছে তাঁর। কলকাতার প্যারানর্মাল গবেষক দেবরাজ সান্যালের মতে, “ভূত কিনা জানি না। তবে কেউ একটা উত্তর দেয়। যেটা খুব অন্য রকম।”  অন্যদিকে, মনোবিদ অনিন্দিতা রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, চিকিৎশাস্ত্রে ভূতের অস্তিত্ব নেই। তবে যেটা রয়েছে সেটা ভয়। ফোবিয়া। মানসচিত্রে যে ছবিটা ভয় দেখায়, সেটাই ব্যক্তিবিশেষে ভূত, প্রেত, পিশাচ!

সব মিলিয়ে ‘অ্যানাবেল’-এর হাত ধরে ফের এক বার তর্কের ময়দানে মুখোমুখি হয়ে পড়েছে সত্যি ও মিথ্যে। বিজ্ঞানের যুক্তি ও ভৌতিক বিশ্বাস। তর্ক চলতেও থাকবে। আর ‘অ্যানাবেল’-এর আতঙ্ক? কে জানে... সূত্র:আনন্দবাজার



Comments