হলি টাইমস রিপোর্ট :
এফবিসিসিআই (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি) বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে চীনের বিনিয়োগ আহ্বান করেছে। বাংলাদেশ সরকারের আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে এফবিসিসিআই সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগের লক্ষ্যে চীনা বিনিয়োগকারিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এছাড়াও এফবিসিসিআই খুব অল্প সময়ের মধ্যে চীনের গুয়াংডং প্রদেশের সাথে উৎপাদন খাতে যৌথ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আজ রোববার (১৯-১১-২০১৭) এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ এবং সফররত সিসিপিআইটি’র (চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড) ৯ সদস্য বিশিষ্ট এক বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনায় এফবিসিসিআই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এসব কথা বলেন। এফবিসিসিআই পরিচালক সালাহউদ্দিন আলমগীর, জনাব রেজাউল করিম রেজনু প্রমুখ আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।
সিসিপিআইটি (চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড) প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্স (সিপিপিসিসি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান মি. লিন জিয়ং। মি. লিন বাংলাদেশের সাথে চীনের ঐতিহাসিক বন্ধৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে এফবিসিসিআই এবং সিসিপিআইটি, গুয়াংডং-এর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। গত বছর চীনের প্রধানমন্ত্রী মি. শি শিনপিং-এর বাংলাদেশ সফরের ফলে বন্ধুত্বপূর্ণ দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশিদারিত্ব আরও জোরদার হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও মি. লিন গুয়াংডং-এর বিশ্বখ্যাত ইলেকট্রনিক এ্যাপ্লায়েন্স বাংলাদেশে রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এফবিসিসিআই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বাংলাদেশ সরকারের আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা যেমন: ট্যাক্স হলিডে, করপোরেট কর সুবিধা ইত্যাদি গ্রহণ করে চীনা ব্যবসায়িদেরকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ( চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা) সুবিধা গ্রহণ করে চীনা ব্যবসায়িরা এদেশে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন বলে জনাব ফাহিম উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা সহ বিশ্বের অনেক দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে তা গ্রহণ করে চীনা ব্যবসায়িদেরকে এদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। জনাব ফাহিম বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশে চীনের প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের বিশাল বাজার সামনে রেখে চীনা কোম্পানিগুলো তাদের কাঁচামাল ব্যবহার করে এদেশে উৎপাদনে এগিয়ে আসতে পারে বলে এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উল্লেখ করেন। চীনা নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জনাব ফাহিম জানান যে, তারা চীনের উৎপাদিত পণ্য ও সেবার তালিকা পাঠালে এফবিসিসিআই থেকে সংশ্লিস্ট খাতের প্রতিনিধিদল সফরের মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৯৪৯.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য চীনে রপ্তানি করে এবং চীন থেকে ১০১২৮.১ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। চীনে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে ওভেন গার্মেন্টস, চামড়াজাত, নীটওয়্যার, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, ফ্রোজেন ফুড এবং প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক সামগ্রী। আর চীন থেকে মুলত টেক্সটাইল এবং টেক্সটাইল সামগ্রী, যন্ত্রপাতি ও ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী আমদানি করা হয়।