মোদীর রাজ্যেও প্রবেশ নিষিদ্ধ পদ্মাবতীর।রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের পরে বুধবার গুজরাতও বলে দিল, পদ্মাবতী ছবিটি তারা রাজ্যে মুক্তি পেতে দেবে না। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী এ দিন বলেন, ‘‘ইতিহাস বিকৃত করে রাজপুত ভাবাবেগে আঘাত করছে, এমন ছবি এই রাজ্য মুক্তি পাবে না।’’ প্রবল বিতর্ক এবং হুমকির আবহাওয়ায় ছবিটির মুক্তির দিন অবশ্য আগেই পিছিয়েছেন নির্মাতারা। সেন্সরের ছাড়পত্রও এখনও আসেনি। এমতাবস্থায় অনেকেরই প্রশ্ন, সেন্সর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই রাজ্যগুলি একতরফা ভাবে ছবিটির মুক্তি আটকাতে চাইছে কেন। বস্তুত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর কিন্তু আজ সে কথা বলেওছেন। তাঁরও বক্তব্য, ‘‘আমরা কারও ভাবাবেগে আঘাত আসতে দেব না।’’ কিন্তু একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, ‘‘সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তের আগে ছবিটি নিষিদ্ধ করা উচিত নয়।’’

কেউ কেউ মনে করছেন, খট্টরের এই সাবধানী মন্তব্য গোয়া চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে কেরল হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের নিরিখেই হয়তো বা। জুরি বোর্ড বাছাই করা সত্ত্বেও কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে প্যানোরামা থেকে বাদ পড়েছিল মালয়ালম ছবি ‘এস দুর্গা’ এবং মরাঠি ছবি ‘ন্যুড’। ‘এস দুর্গা’র পরিচালক শশিধরন এ নিয়ে কেরল হাইকোর্টে মামলা করেন। গত কালই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপর দিয়ে যেতে পারে না সরকার। চলচ্চিত্র উৎসবে ওই ছবি দেখাতেই হবে। হাইকোর্টের এই রায়ের পরে জল্পনা চলছে, সেন্সরের মত জানার আগেই কোনও রাজ্য ছবির মুক্তি আটকাতে পারে কি না, এই যুক্তিতে মামলা করবেন কি না পদ্মাবতীর পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভংসালীও। পরিচালক-নির্মাতাদের তরফে অবশ্য এমন ইঙ্গিত মেলেনি।

বিতর্কের জল সংসদের দরজাতেও পৌঁছেছে। লোকসভা পিটিশন কমিটির কাছে ছবিটির বিরুদ্ধে আবেদন করেন রাজস্থানের দুই বিজেপি সাংসদ সিপি জোশী এবং ওম বিড়লা। জোশী নিজেও ওই কমিটির সদস্য। তিনি এ দিন জানান, ‘পদ্মাবতী’ মুক্তি পাওয়ার আগে তা ইতিহাসবিদদের দেখানো হবে। মতামত চাওয়া হবে মেবার রাজবংশের উত্তরসূরিদের কাছেও। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেন্সর বোর্ড ও তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে ছবিটি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছে কমিটি।

মন্ত্রক অবশ্য এত কিছুর মধ্যে এখনও অবধি পদ্মাবতী নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি। কেন? সেই প্রশ্নই এ দিন তুলেছেন বিজেপিরই সাংসদ-অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিংহ। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী ও আমাদের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত চুপ করে আছেন কী করে। অনেক তো হল!’’ সূত্র:আনন্দবাজার পত্রিকা