হলি টাইমস রিপোর্ট :

 

যাঁরা ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মালদহের আফরাজুল খানকে রাজস্থানে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুন করার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মমতা। এ নিয়ে প্রতিবাদ, আন্দোলন থেকে শুরু করে নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো পর্যন্ত কিছুই বাদ রাখেননি তিনি। পাশাপাশি আঙুল তুলেছেন বিজেপি-শাসিত রাজ্যের ‘ভেঙে পড়া’ আইনশৃঙ্খলার দিকে। এ বার আরও একধাপ এগিয়ে এসে তিনি সরাসরি বলেই দিলেন, ‘‘যাঁরা অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁরা যদি কোনও রকম সমস্যা বুঝে ফিরে আসতে চান, আমরা তাঁদের পাশে থাকব।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের কাছে নাম লেখালে তাঁরা এককালীন ৫০ হাজার টাকা পাবেন। এ ছাড়াও, তাঁদের ১০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে ২০০ দিনের কাজ দেওয়া হবে। এক বছর আগে নোটবন্দির ফলে কাজ হারানো পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের রাজ্যে ফিরে আসতে এই একই রকম ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

মোদীর ভারতে সামগ্রিক পরিস্থিতির ‘অবনতি’ বোঝাতে মমতার এই আহ্বানকে রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকের মতে, রাজস্থানের ঘটনা সামনে রেখে তিনি এক দিকে যেমন নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছেন, তেমনই ভিন্ রাজ্যে কাজের জন্য যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের ফিরে আসতে বলে প্রমাণ করতে চাইছেন বিজেপি-র হাতে দেশের ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো’ কী ভাবে ভেঙে পড়ছে। যেখানে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে কাজ করার পরিস্থিতি নেই।

মঙ্গলবার পুরুলিয়ার কোটশিলায় প্রশাসনিক জনসভায় অন্য রাজ্যে চলে যাওয়া মানুষদের ফিরে আসতে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরে তিনি চলে যান বাঁকুড়ায়। সেখানে পৌঁছেই খবর পান, কেরলে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে এই জেলার ইন্দাসের এক যুবক হেমন্ত রায়ের। মালদহের বাসিন্দা আফরাজুলের মতো তিনিও ভিন্‌ রাজ্যে কাজের খোঁজেই গিয়েছিলেন।

সেই সূত্রেই মমতা সভায় বলেন, ‘‘অনেক ছেলেমেয়ে বাইরে থেকে যেমন আমাদের রাজ্যে কাজ করতে আসে, আমাদের রাজ্য থেকেও বাইরে কাজে যায়। কেন তাদের উপর জুলুম হবে, খুন করা হবে?’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলার মানুষ সবাইকে ভালবাসে। বাংলার মানুষের উপরে অত্যাচার করা যাবে না। আর বাংলাও কারও উপর অত্যাচার করবে না।’’ খবর : আনন্দ বাজার

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির কোনও কোনও নেতা আছেন, কিছুই বোঝেন না। রাজস্থানে, গুজরাতে দলিতদের উপরে, সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার হয়। আমরা কোনও পার্থক্য করি না।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বলুন তো, মমতা ব্যানার্জি আর শান্তিরাম মাহাতোয় কোনও পার্থক্য আছে? শান্তিরাম মাহাতো আর ফিরহাদ হাকিমে কোনও পার্থক্য আছে? না ফিরহাদ হাকিম আর নিয়তি মাহাতোর কোনও পার্থক্য আছে?’’

মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা কাজ করছেন, দরকার নেই, চলে আসুন এখানে। আমি চাই না আমার ভাইবোনেরা বাইরে গিয়ে বিপদে পড়ুন। আমরা সাহায্য করব ফিরে আসুন। আমাদের এখানে কাজের অভাব নেই।’’ ভিন্ রাজ্যে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে বিশেষ অফিস খোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।