Wed, Oct 11 2017 - 11:17:14 PM +06

চলছে কন্যা সপ্তাহ !


News Image

সাগরিকা মন্ডল,ঢাকা:

 

কন্যা শিশুকে হ্যাঁ বলুন , শান্তিময় জীবন গড়ুন ।কন্যা গর্ভজাত স্ত্রীলিঙ্গের অধিকারী শিশু। পিতা-মাতার ঔরসে জন্মগ্রহণকারী বালিকা, মহিলা কিংবা অন্য যে-কোনো স্ত্রীজাতীয় প্রাণী কন্যা নামে পরিচিত। পিতা মাতার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ফল ও বটে। কন্যা হলো দশভূজা,সহিস্নু, শক্তিময়ী । একটি সফল কন্যা যেমন একটি জাতি বা দেশকে পরিচালনা করতে পারে তেমনি পারে তার কোলে সকল অসহায়দের আশ্রয় দিতে । কন্যা মানেই মমতাময়ী ।কন্যা হলো মাটি। কৃষক যেমন মাটি খুড়েঁ তাকে কষ্ট দিয়ে গাছ রোপন করে ,আর মাটি তা সহ্য করে তাকে বেঁচে থাকার শক্তি যুগিয়ে ফল উপযোগি করে তোলে, কন্যা ও সেই রুপে নিজে হাজার কষ্ট করে বেড়ে ওঠে দেশ,জাতি,সমাজকে গড়ে তোলে । কন্যা শিশুকে হ্যাঁ বলুন , শান্তিময় জীবন গড়ুন। কন্যা মোদের বোঝা নয়,মনে রাখুন সব সময় । আজকে কন্যা শিশু আগামি দিনের বোন,স্ত্রী,মাতা,শাশুড়ি । কন্যা শিশুকে ভালোবাসুন,দেশের শান্তি বজায় রাখুন ।

 কন্যা:

কন্যা শব্দের অন্যান্য সমার্থক শব্দ হচ্ছে - দুহিতা, আত্মজা, তনয়া, সুতা, নন্দিনী, মেয়ে ইত্যাদি। তবে বাংলা ভাষায় মেয়ে শব্দের বহুল প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। কন্যার সমকক্ষ ও সমমর্যাদার অধিকারী পুংলিঙ্গবাচক সন্তান হচ্ছে পুত্র বা ছেলে।স্ত্রীলিঙ্গের অধিকারী এ শব্দটি অনেক এলাকায় সম্পর্ক নির্দেশক হিসেবে দল কিংবা স্তরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

বিশ্বজুড়ে চলছে  সপ্তাহ । পৃথিবীজুড়ে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর প্রথম আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবসটি পালন করা হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করে থাকে।এ দিবসের সূচনা করা হয়, মেয়েদের শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনী সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বলপূর্বক বাল্যবিবাহ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে ।

ইউনেস্কো মহাসচিব মিজ ইরিনা বোকোভার দেয়া বার্তা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস ২০১৭-এর প্রতিপাদ্য “এমপাওয়ার গার্লস: ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড রেসিলেন্স প্ল্যানিং”। যার অর্থ “মেয়েদের ক্ষমতায়নে জরুরী সহায়তা ও প্রতিরোধ পরিকল্পনা”।


কন্যার মাতা-পিতাদের প্রতি কিছু উপদেশঃ

১. অনেক পিতা-মাতা পুত্র সন্তান জন্ম নিলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায় বটে, কিন্তু কন্যা সন্তান জন্ম নিলে মুখ শুকিয়ে কালো চামচিকে হয়ে যায়, এমনটি হওয়া কোনো ক্রমেই উচিত নয়।

২. কত খুশির খবর যে, আল্লাহ তা’আলা বা ভগবান দয়া করে আপনার ঘরের সৌন্দর্যরূপে, সৌভাগ্যের ফুল রূপে, অঢেল রুপের অধিকারিণীরূপে একটি ফুটফুটে পূর্ণিমার চাঁদ (মেয়ে) দান করেছেন।

৩. তাই কন্যা সন্তান জন্ম নিলে অসন্তোষ প্রকাশ না করে আল্লাহর বা ভগবানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে ঈমানের পরিচয় দেয়া কর্তব্য।

৪. মনে রাখবেন- কন্যা সন্তান অপছন্দ করা আল্লাহর ভগবানের সিদ্ধান্তকে অপছন্দ করা একই কথা। আর নিঃসন্দেহে একথা বলা যায় যে, যারা কন্যা সন্তানের কারনে মনঃস্তাপে কষ্ট হয়, দুঃখিত ও লজ্জিত হয় , তাদের ঈমানে রয়েছে দুর্বলতা; এমন কি বিশ্বাসে রয়েছে অসচ্ছতা।

৫. তাদের একথা হৃদয়ঙ্গম করা একান্ত প্রয়োজন যে, তারা এবং তাদের পরিবারের, বংশের সমাজের সমগ্র বিশ্ববাসীর শত প্রচেষ্টা সত্তেও আল্লাহর বা ভগবানের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবে না। আল্লাহ বা ভগবান যা ইচ্ছা তাই করেন, করবেন। তিনি সর্বশক্তিমান, রাজাধিরাজ , সর্বকর্মবিধায়ক। তিনি যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন।

কন্যা শিশু ফাইন্ডেশন এর আজকের স্লোগান হলো -,কন্যা শিশুকে বাড়তে দিন ,জাতি করবে চিররঙ্গীন ।

কন্যা শিশু কারো সংসারের বোঝা নয়।কোনো পিতা মাতা যদি তার কন্যাকে অবহেলা না করে তবে অন্য কেউ তাকে অবহেলা করার চিন্তা মাথায় আনলে ও তা কখনো ফলপ্রশ্রু হয় না। মাতা পিতা ভগবান স্বরুপ তাদের আর্শিবাদ মাথায় থাকলে কলঙ্কীত কন্যা ও সতী হওয়া সম্ভব ।একজন কন্যা শিশুর প্রতি যেমন বাবা মায়ের ইতিবাচক সারা দরকার তেমনি পরিবারের অন্য সদস্যদের ও ঐ রুপ মনোভাব থাকা দরকার ।একটি কন্যা শিশু বেড়ে ওঠার পিছনে বাবা মার মানসিক পরিনতি কন্যার বয়সের উপরে প্রভাব ফেলে । প্রভাবিত বিষয়গুলো হলো-

১। সামাজিক জীবন ও রীতি

২। দায়িত্ব

৩। র্কতব্য

৪। পারিবারিক সম্পর্ক, মূল্য ও নৈতিক বোধ

তাই কন্যা শিশু বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এ সব বিষয়ের প্রতি করা নজর রেখে কাজ করতে হবে যাতে  কন্যা সন্তানের উপর কোনো প্রকার কোনো ক্ষতিমূলক প্রভাব না পরে।