Sun, Jan 7 2018 - 4:04:24 PM +06

চরবানিয়ারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্লাটিনাম জুবলী আনন্দ আয়োজন


News Image

বিভাষ চন্দ্র দাস , বাগের হাট :

চরবানিয়ারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর র্পূতিতে তিনদিনব্যাপি প্লাটিনাম জুবলী আনন্দ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। আজ রে‍াববার থেকে আগামি মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে এই অনুষ্ঠান  ।  চরবানিয়ারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্লাটিনাম জুবলি অনুষ্ঠানের আহবায়ক পীযূষ কান্তি রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র ও বাগেরহাট- আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিসেস রূপা চৌধুরি, শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজ আবজাল, চিতলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুজিবর রহমান শামীম, উজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুসাঈদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  বাবুল হোসেন খান,বাগেরহাট জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আহাদ উদ্দীন হায়দার, জেলা পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব মোহন আলী বিশ্বাস,চরবানিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দীন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নের্তৃবৃন্দসহ বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তণ পাঁচ সহতাধিক শিক্ষার্থী।

 

 

চরবানিয়ারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭৫ র্পূতি অনষ্ঠানের অতিথি বৃন্দ

 

 

প্রথম দিনেই থাকছে  প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনা সহ গন্যমান্য ব্যাক্তির্বগদের পদচারণ  ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, মুক্তিযুদ্ধের আলোক চিত্র প্রদর্শনী, পৌষের সংগীতাঞ্জলি,ব্যান্ড শো, স্মৃতিচারন, মধুর আড্ডা, ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । দ্বিতীয় দিন থাকছে ভারতীয় সা রে গা মা পায়ের শিল্পীর আগমন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তৃতীয়দিন থাকছে বাউল ও জারি গান ।

চরবানিয়ারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় শুরুতেই মডেল ছিল না ! অনেক কাঠখড় পুরিয়ে সাবেক বৃহত্তর কচুয়া থানার প্রথম বি এ পাশ প্রফুল্ল চন্দ্র রায়য়ের নিরলস পরিশ্রমে ও প্রায়াত প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বড় ছেলে, স্কুল কমিটিসহ এলাকাবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল   স্বনাম ধন্য এ প্রতিষ্ঠান। পিযুষ বাবু  প্রায়াত প্রফুল্ল চন্দ্র রায়েই ছেলে । 

 

ইতিহাসের পাতায় লেখা চরবানিয়ারী মডেল স্কুল :

স্কুলটি মুলত  প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৫ সালে। পরে ১৯৪৬ সালে বৃটিশ সরকারের অনুমোদন লাভ করে ও ১৯৪৬ সালে বিদ্যালয়টি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক প্রথম স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। ২০০৪ সালে ষষ্ঠ,সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে বোর্ড কর্তৃক ‘খ’শাখা এবং ২০১১ সালে নবম শ্রেণিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক‘খ’শাখা  খোলার অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। ১৯৬৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ এবং ২০০৫ সালে ব্যবসায় শিক্ষা খোলা হয়। বর্তমানে তিনটি বিভাগেই শ্রেনী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে । শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা দানের জন্য ১৯৯৭ শিক্ষা বর্ষ থেকে কম্পিউটারশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

 

 

ছবি : অপুর্ব বড়াল

 

 

 

১৯৪৩ সাল থেকে অদ্যাবধি মোট ১৩ (তের) জন প্রখ্যাত স্বনাম ধন্য প্রধান শিক্ষক অত্যান্ত সুনাম ও সাহসিকতার সহিত ছাত্র/ছাত্রীদের লেখাপড়ার মানোন্নয়নের জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যালয়ের বর্তমান সুযোগ্য সুদক্ষ প্রধান শিক্ষক বাবু পীযূষ কান্তি রায় প্রশাসনিক, একাডেমিক সহ সকল দায়িত্ব,কর্তব্য নিষ্ঠার সহিত পালন করে আসছেন।

অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সুনীল কুমার মন্ডলের কাছ থেকে জানা যায় , ১৯৭১ সালে বিদ্যালয়টি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল।পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের অত্যাচারে আসহায় নির্যাতিত মানুষ এ বিদ্যালয়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে পরবর্তিতে ভারতের উদ্দেশ্যে গমন করেছে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক/শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের প্রায় শতভাগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১০ জনশিক্ষক/শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। প্রথমে এটি খাসেরহাট মধ্য ইংরেজী (M.E ) স্কুল ছিল। ১৯৪৩ সালে  সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি শুরু করে এবং‘চরবানিয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়’নামে আত্মপ্রকাশ করে।  তিনি ও এ স্কুলেরই ছাএ ছিলেন ।

তিনি বলেন , প্রধান শিক্ষকের আগ্রহ, অন্যান্য শিক্ষক ও কমিটির  প্রচেষ্টায় উত্তর বাগেরহাটের এ বিদ্যাপিঠ সাহিত্য সংস্কৃতি ও পড়াশুনায় প্রথম সারিতে রয়েছে । বিদ্যালয়টি পরীক্ষার ফলাফলে  উপজেলার শীর্ষ স্থানের দাবীদার। জেলা,উপজেলা পর্যায়ের খেলাধূলা ,ডিসপ্লে প্রদর্শনীতে ও বিদ্যালয়টি বার বার প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে ।

এ ছাড়াও এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা যায় , র্বতমানে  বিদ্যালয়ের ছাএ ছএীদের পাশের সংখ্যা ১০০% । বিদ্যালয়ে একটি হ্যান্ডবল টিম রয়েছে যারা উপজেলা জেলা র্পযায়ে খেলার সুযোগ লাভ করে পুরষ্কৃত হয়েছে ।

এই স্কুলের অগনিত ছাএছাত্রী দেশ তথা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ন পদে কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন।

চিতলমারী,কচুয়া ও নাজিরপুরের প্রানকেন্দ্র খাসেরহাট এলাকার ২৫টি গ্রামের মানুষের লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়টি সবসময় তার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৯ সালে সর্বপ্রথম বিদ্যালয় থেকে ছাত্র/ছাত্রীরা ম্যাট্রিকুলেটবা এনট্রাস পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে পরীক্ষা ক্ষেত্রে তার শুভ যাত্রা শুরু করে।

 

ইডি/ সাগরিকা মন্ডল/অ/বি/ ৭/১/১৮