Mon, Mar 17 2014 - 12:00:00 AM +06

বাংলাদেশকে ঠেকিয়ে রাখা অসম্ভব: মোজেনা


News Image
নিউ ইয়র্ক: বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনা বলেছেন, বাংলাদেশ যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে তাতে দেশটির অগ্রগতি ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দুর্যোগের দেশ হিসেবে জেনে এসেছি। কিন্তু এখন আগের বাংলাদেশ নেই। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ‘দেশটির ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং আমি বাংলাদেশ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী’ বলেন মোজেনা। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রদূত মোজেনাকে প্রদত্ত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রবিবার স্থানীয় সময় দুপুরে নিউ ইয়র্কের উডসাইডে গুলশান ট্যারেসে ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর জাস্টিস ইনকের চেয়ারপারসন অস্টিন ম্যানগাম এবং আমেরিকান বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি ইনকের চেয়ারপারসন এটর্নি মঈন চৌধুরী এ সংবর্ধনা সভার আয়োজন করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কাউন্সিলম্যান ড্যানিয়েল ড্রম, জিম ম্যাকলেন, কস্টা কন্টারেইডস, বিচারপতি ক্যারেলন, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ এর সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি ডা. মোহাম্মদ হামিদুজ্জামান। ড্যান মোজেনা বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অংশীদার এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র সকল ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে অচিরেই একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে তাই নয়, বাংলাদেশই হবে পরবর্তী এশিয়ান টাইগার এবং দেশটির জনগণই এটি সম্ভব করে তুলবে। রাষ্ট্রদূত মোজেনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে এবং খুব শিগগিরই বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ড সমগ্র বিশ্বে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে পরিণত হবে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর পরিদর্শনে লোকবল বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাও এ ব্যাপারে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে বাংলাদেশকে দেয়া ১৬টি শর্ত পূরণের উল্লেখ করে মোজেনা বলেন, এসব শর্ত পূরণে বাংলাদেশ যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মার্কিন সহযোগিতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দারিদ্র দূরীকরণে, জনগণের জীবন মান উন্নয়নে, জীববৈচিত্র রক্ষায়, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে একটি মজবুত অবস্থানে নিয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহায়তা করে যাচ্ছে। ‘আমরা ইতোমধ্যে ৫৪৭টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে সহায়তা করেছি এবং আরো ১৩০টি শেল্টার নির্মাণের কাজ চলছে। সাইক্লোন ও দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়ে প্রতিটি শেল্টারে ১৮শ’ লোক আশ্রয় নিতে পারবে।’ যোগ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ডা. মোহাম্মদ হামিদুজ্জামান বাংলাদেশের বর্তমান সরকার পরিচালিত মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচার বিভাগকে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেন। এ সব অনিয়ম বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারকে বাধ্য করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি সীমিত অবরোধ আরোপের আহবান জানান তিনি। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত মোজেনা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বুঝাতে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। এটর্নি মঈন চৌধুরী রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা সম্ভাব্য সব উপায়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যে অবদান রাখছেন তার প্রশংসা করেন। দেশে জনগণের জীবন মান উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানসহ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কংগ্রেসম্যানসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সম্মিলিত ভূমিকা আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জেবিবিএ’র সাবেক সভাপতি সাইদ রহমান মান্নান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, আবুল কাশেম চৌধুরী, ডা. এহসান হক, আসিফ চৌধুরী, হাটবাজার ও গুলশান ট্যারেসের স্বত্ত্বাধিকারী মহসিন ননী হলি টাইম্‌স ডটকম/১৭ মার্চ/ ২০১৪)