হলি টাইমস রিপোর্ট :
বাড্ডা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ আলাউদ্দিন টুটুলের বিরুদ্ধে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে। সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অনেকেই বলেছেন, দলিল রেজিস্ট্রি করার ক্ষেত্রে ভূমির রূপ পরিবর্তন, ঘর বাড়ির উল্টা পাল্টা রূপে কাঠামো পরিবর্তন করে এই রাজস্ব ক্ষতি করা হয়। বিনিময়ে বিপুল অঙ্কের টাকা নিজের পকেটে পুরে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই নকল নবিশ।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো জানিয়েছেন, জমিজমা ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জমির মূল্যমান কমিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়। অথচ এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নেন আলাউদ্দিন টুটুল গং। এই কাজে তাকে সরাসরি সহযোগিতা করেন উমেদার নাসির, উমেদার রাব্বী ও অফিস সহকারী মো: রাসেল। সারা বছর ধরে এই সিন্ডিকেট সরকারি রাজস্ব ক্ষতির কাজটি করে থাকেন বলে অভিযোগ। যদিও এদের কেউই তা স্বীকার করেন না।
উদাহরণ দিয়ে ওই সূত্রগুলো বলেছে, বাড্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গত ১/৮/২০২৩ তারিখে একটি দলিল (নং ১১১১৩) রেজিস্ট্রি হয়েছে। ওই জমিতে ছিল একটি পাকা বিল্ডিং । অথচ দলিল করার সময় যে বর্ণনা করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে সেখানে ছিল একটি টিন সেড ঘর। মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে দলিল রেজিস্টি করার সময় সরকার রাজস্ব কম পেয়েছে। কাগজে কলমে এই কাঠামো পরিবর্তন করে দেওয়ার কাজটি করেছেন নকলনবিশ উলাউদ্দিন টুটুল । অবৈধভাবে গ্রহন করেছেন মোটা অঙ্কের টাকা। এভাবেই সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কিছু অসাধু নকল নবিশ সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করছেন আর নিজেরা অবৈধ কালো টাকার মালিক হচ্ছেন।
অবৈধ সুবিধা নেওয়া কিছু নাগরিক আর নকল নবিশরা সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করে খাস জমি কে বানান মালিকানা জমি, নাল জমিকে বানান বসত ভিটে, বসত ভিটেকে বানান নাল, সিটি কর্পোরেশনকে বানান পৌরসভা ও ইউনিয়ন, আবার ৫ তলা ভবনকে টিনশেড দেখিয়ে এভাবেই সরকারের কর ফাঁকি দিয়ে চলেছেন।
সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবা বিল এওয়াজ, অসিয়তনামা, ঘোষণাপত্র, আমমোক্তার নামা দলিল রেজিস্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকিতে সহযোগিতা করে চলেছে আলাউদ্দিন টুটুলদের একটি সিন্ডিকেট। নিজেরা কালো টাকার মালিক হয়ে নামে বেনামে বাড়াচ্ছে বাড়ি গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের সম্পদ।
ভূমির শ্রেনী পরিবর্তন করা হয়েছে এসব দলিলে :
রাজধানী ঢাকার বাড্ডা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস কিছু নকল নবিশের কারনে দুর্নীতি ও জালিয়াতির আতুর ঘরে পরিনত হয়েছে।
জমির নিবন্ধন, নামজারি, জাল দলিলে জমি দখলসহ নানা ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারন মানুষ। এমনও অভিযোগ আছে যে, সাব-রেজিস্ট্রারের রুটিন মাফিক কাজ নকলনবিশরাও করে দেন। এতে দুর্নীতির ডালপালা বাড়ছে।
যদিও এই জাল জালিয়াতি, অনিয়ম, জমির শ্রেনী বদলানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলাউদ্দিন টুটুল। হলি টাইমসের এই প্রতিবেদক’কে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়। বানোয়াট এবং মিথ্যা। প্রয়োজনে সেই সব দলিলের নকল তুলে দেখানোর কথাও বলেছেন তিনি। তবে এও বলেছেন যে, জাল জালিয়াতি করে এমন কিছু লোক তার পিছনে লেগেছে। তারাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির রটনা রটাচ্ছে। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, নাখাল পাড়ায় তার নিজের কোনো জমি বা বহুতল ভবন নেই। অথচ মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে কেউ কেউ।
ঘর বাড়ি বিল্ডিংয়ের কাঠামো উল্টা পাল্টা করে মিথ্যা তথ্য সংযোযিত করা হয়েছে এই দলিলগুলোর
রেজিস্ট্রি কমপ্লেক্সে এই নকলনবিশ আলাউদ্দিন টুটুল’কে অনেকেই হাজী সাহেব এবং দরবেশ বলে ডাকেন। যার বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের সরকারি রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ এবং অবৈধ কালো টাকা আয়ের অভিযোগ সেই কিনা কথিত দরবেশ।
মি. আলাউদ্দিন অবশ্য বলেছেন, তাকে দরবেশ কোনো ডাকা হয় তা তিনি জানেন না। তবে তিনি হজ¦ করেছেন। তিনি এই প্রতিবেদক’কে এক পর্যায়ে আরেক নকলনবিশ সহিদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ওই সহিদুল-ই নাকি মিডিয়াকে ম্যানেজ করেন। দুর্নীতি ঢাকার যথাযথ ব্যবস্থাও করা আছে এই সাব রেজিস্টি অফিসে।
বিষয়গুলো নিয়ে বাড্ডা সাব রেজিস্টার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মুঠো ফোনে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোনো মন্তব্য প্রকাশ করা গেল না।