Contact For add

Sat, May 10 2025 - 1:18:32 PM +06 প্রচ্ছদ >> জাতীয়

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় প্রশাসক বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টেরজাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় প্রশাসক বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় প্রশাসক বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

হলি টাইমস রিপোর্ট :

নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারনে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় প্রশাসক বসানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট । আগামী এক মাসের মধ্যে সমাজসেবা অধিদফতরকে ওই সংস্থায় প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বলা হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলেছেন, একতরফা কমিটি গঠন, ভোটার তালিকা থেকে সদস্যদের বাদ দেওয়া, সদস্যপদ বাতিল করা সহ নানা ধরনের দুর্নীতির কারনে ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত অন্ধদের এই সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগ করতে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিলো।  গত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিন বছর মেয়াদি জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় অন্ধ আয়ুব আলী, নূরুল আলম সিদ্দিক এবং তাদের দোষররা স্বৈরতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন করে সংস্থাটি পরিচালনা করে আসছিল। তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে, নূরুল আলম এবং আয়ুব আলী ২০১৭ সাল থেকেই সংস্থাটিকে নিজেদের কব্জায় রাখতে স্বৈরাচারি হয়ে ওঠেন। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বহু সদস্যদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, বাতিল করা হয় সদস্য পদ । ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত এই সংস্থার চেয়ারম্যান থাকা মিনহাজ উদ্দিনের সদস্যপদও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে জাতীয় অন্ধ সংস্থার (নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থা) সদস্য ছিল ৩৩২ জন ।২০২০-২০২৩ মেয়াদের নির্বাচনের আগেই সেই সদস্য সংখ্যা থেকে অপছন্দের অন্ধদের বের করে দিয়ে সদস্য রাখা হয় ১৯২ জন। এবং ২০২৩ সালে কমিটি গঠনের আগে আরো সদস্য বাদ দিয়ে ভোটার করা হয় ১৮০ জন।গত ছয় বছরে আয়ুব আলী গং অন্ধসংস্থা থেকে ১৫২ জন অন্ধকে বের করে দিয়েছে।যা চরম অমানবিক ছিল। এই বিষয়টি আমলে নিয়েছে হাইকোর্ট ।

সংস্থার সাবেক সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন হলি টাইমসকে বলেছেন, তিনি সংস্থার একতরফা পরিচালনা কমিটি  গঠন বিষয়ে একাধিক অভিযোগ করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা সমাজ সেবা অধিদফতরে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সর্বশেষ গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বর্তমান পরিচালনা কমিটি বাতিল করে সমাজ সেবা অধিদফতরকে প্রশাসক নিয়োগের জন্য চিঠি দেন । অধিদফতর তার আবেদনে সারা না দেওয়ার কারনে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (নং-১৫০৭০/২০২৪)দায়ের করেন ।হাই কোর্ট প্রথমে এ বিষয়ের ওপর রুল জারি করে এবং চলতি ৫ মে তারিখে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি নিষ্পত্তির আদেশ দেন। গত ৫ মে’র শুনানিতে আয়ুব আলী অংশি হিসেবে সংযুক্ত হয়ে প্রশাসক নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন কিন্তু হাইকোর্ট আগামী এক মাসের মধ্যে জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় প্রশাসক নিয়োগের জন্য সমাজ সেবা অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

অন্ধ আইয়ুব : ছবি- হলি টাইমস 

জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার মূল আয়ের উৎস হচ্ছে সাভারের অন্ধ মার্কেট।এই মার্কেট পরিচালনায় আয়ুব আলী ৫০ কোটি টাকার মতো দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দুদকে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সেই দুর্নীতি তদন্তে দুদক’কে নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট  ।

এর আগে আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে দুজন অন্ধকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছিল। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যা, নির্যাতনে অর্থের যোগানদাতা হিসেবে আশুলিয়া থানা, হাতির ঝিল থানা এবং মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। সেই মামলার তদন্ত চলমান।

হলি টাইমসের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে, বর্তমানে সংস্থার পরিচালনা কমিটিতে অনেক অন্ধ রয়েছে যারা রাস্তায় ফুটপাতে ভিক্ষা করে। অন্যদিকে সদ্য প্রয়াত নূরূল আলম আর আয়ুব আলী থাকে আলিশান ফ্লাটে, ঘুরে বেড়ান বিলাস বহুল প্রাইভেট গাড়িতে। এই দুইজন ছাড়া বাকি অন্ধদের একটুও ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন নিখিলের সঙ্গে আয়ুব আলীর গভীর সম্পর্ক থাকায় সাভারের অন্ধমার্কেটে দুর্নীতি করা সহজ হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ বিগত ১৭ বছর যেভাবে একতরফা ভোটার বিহীন ভোট করে, ক্ষমতায়  ছিলো তার দোষর আয়ুব আলীও জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থায় একই পন্থায় পরিচালনা কমিটি চালিয়েছেন। প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে সেই ক্ষমতার অবসান হবে বলেই মনে করছেন সাধারণ অন্ধরা।

 



Comments

Place for Advertizement
Add