Contact For add

Tue, Jul 25 2017 - 4:34:35 PM +06 প্রচ্ছদ >> দেশের খবর

Professor Manik is not acknowledging his child being born in the workplaceকাজের মেয়ের ঔরসে জন্ম নেওয়া নিজের সন্তানের স্বীকৃতি দিচ্ছে না প্রফেসর মানিক

কাজের মেয়ের ঔরসে জন্ম নেওয়া নিজের সন্তানের স্বীকৃতি দিচ্ছে না প্রফেসর মানিক

 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :

কাজের মেয়ের ঔরসে নিজের সন্তানের স্বীকৃতি দিচ্ছে না গোপালগঞ্জের প্রফেসর মানিক গোলদার। এই নিয়ে সমাজের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিরাও এগিয়ে আসছে না। মধ্যযুগীয় বর্বরতায় ভবঘুরেরাও সন্তানের জন্ম দেয়। সমাজের একাংশ মানুষ রুপি নরপিশাচদের হাত থেকে রাস্তায় চলা ভবঘুরেরাও নিস্তার পায় না। সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষ যেন অমানুষের রুপ নিতে শুরু করেছে।

ব্যাপক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাগল মায়ের নাম পুতুল, বয়স আনুমানিক ২২ এর কাছাকাছি। বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সাতপাড় মধ্যপাড়া  এলাকার গোলদার বাড়ি। গত কয়েক বছর আগে পুতুল কাজ করতো একই এলাকার প্রফেসর মানিক গোলদারের বাড়িতে। এ ভাবেই কিছু মাস ধরে কাজ করেছে পুতুল। গত ৭ বছর পূর্বে পুতুলকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রফেসর মানিক গোলদার পুতুলের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকে ভোগ করে আসছিল বলে জানান পুতুলের মা-বাবা। সর্ম্পকের এক পর্যায়ে পুতুলের শরীরিক পরিবর্তন দেখে পুতুলকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন প্রফেসর মানিক গোলদার। পুতুল যেন কিছুতেই মানতে রাজি ছিল না তাড়িয়ে দেয়ার পরেও বার বার পুতুল ছুটে যেত প্রফেসর মানিক গোলদারের বাড়িতে। পুতুল যখন সেখানে স্থান না পেয়ে দুইবার আতœহত্যা করতে যায়। শেষ পর্যন্ত সে পাগল হয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যায় পুতুল। দিন গড়িয়ে মাস যায় এরই মাঝে পুতুল জন্ম দেয় একটি শিশু পুত্রের।

প্রফেসর মানিক গোলদারসহ তার আত্মীয়-পরিজন কেউ পুতুলকে আর ঘরে তোলেনি। পাগল নামেই রাস্তার পাশে আর বাজার হাটের বারান্দা হয়ে যায় পুতুলের একমাত্র ঠিকানা। এরই মাঝে পুতুলের সন্তান সুদিপ ৭ বছরের বালক, বাবার স্বীকৃতি চায় সে, কিন্তু সুদিপকে সন্তান বলে মানতে রাজি না মানুষরুপী নরপিশাচ প্রফেসর মানিক গোলদার। এখন এই অবুঝ শিশু সন্তানটির ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। স্বাভাবিক ভাবেই বলার অপেক্ষা রাখে না মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা শিশুটিকে কুড়িয়ে পায়নি। যাই হোক মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকারই হোক আর যে ভাবেই হোক ভারসাম্যহীন মহিলার কোলে থাকা শিশুটি তো আর ভবঘুরে হতে পারে না। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এই শিশুটি আজ পাগল মায়ের কোলে। প্রায়ই এই মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়েটিকে দেখা যেত অন্য ৫ জনের মত এলাকার যত্রতত্র ঘুরে বেড়াতে। জন্ম নেওয়া সদ্য জাতক শিশুটিকে নিয়ে পাগলী মেয়েটি প্রচন্ড শীতে রাস্তার পাশে, দোকানের বারান্দায় বা গাছ তলায় রাত কাটাতে দেখা গেছে প্রায়। স্বাভাবিক ভাবে মানুষ যখন প্রচন্ড ঠান্ডায় শীত বস্ত্রে শীত নিবারণ করতে কষ্ট হয় তখন এই নবজাতক শিশুটি কিভাবে পাগল মায়ের কোলে বিনা শীত বস্ত্রে রাত্রী যাপন করে কেউ সেটা ভেবে দেখে না। পাগল মায়ের কোলে এই শিশুটিকে দেখতে পেয়ে কেউ কেউ হয়তো পাঁচ, দশ টাকা শিশুটির হাতে ধরিয়ে দেয়। কিন্তু পাগল মা ও সদ্যজাতক শিশুটির কাছে এই টাকার কি মূল্য! কে জানে কত মাস ধরে এই শিশুটিকে নিয়ে পাগল মা গ্রাম থেকে শহরের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে, নালা নর্দমার খাবার খেয়ে বেঁচে রয়েছে শিশুটি। সেই নির্মম দৃশ্য দেখার যেন কেউ নেই।

তথাকথিত ভাবে দেশের উন্নয়নের বাজনায় যখন মাঠঘাট গরম। কিন্তু নিষ্পাপ এই শিশুটি দিনের পর দিন মাসের পর মাস পাগল মায়ের কোলে পাগল শিশু হয়ে ঘুরে বেরালেও তাকে উদ্ধার করার কারোর কোন উদ্যোগ নেই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে এ সব ভবঘুরেদের দায়িত্ব কে নেবে ? এই ধরনের ব্যতিক্রর্মী ঘটনায় দেশের সরকারকে এগিয়ে আসার প্রয়োজনিয়তা কতটা তা হয়তো সরকারের প্রতিনিধিরাই ভাল বলতে পারবেন। কিন্তু মানবিক দিক থেকে বিচার করলে হয়তো শিশুটির ভবিষ্যৎ দেখার দায়িত্ব অবশ্যই দেশের সরকারের রয়েছে। জন্ম দেয়া মা পাগল বলে শিশুটিকেও পাগল বলে সমাজ থেকে ঠেলে দিলে আরো একটি পাগলের জন্ম হবে সমাজে। পাগলের সন্তান পাগল হবে সেটা হয়তো সঠিক ভাবনা নয়। তবে আর যাই হোক পাগল মাও মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করেনি শিশুটিকে। পাগল মায়ের মমতায় আগলে রেখেছে শিশুটিকে মায়ের কোলে। নালা নর্দমার পঁচা গলা খাবার, যখন যা পেয়েছে শিশুটিকে খাইয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে, সেটাও তো কম কথা নয়।

পাগলের সন্তান পাগল হবে সেটা না করে শিশুটির পাশে সরকারসহ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছে এলাকার অভিজ্ঞ মহল।

 



Comments

Place for Advertizement
Add