Contact For add

Tue, Nov 14 2017 - 10:44:50 AM +06 প্রচ্ছদ >> বিশেষ খবর

MP Liton killed Background was created due to his wife's corruptionস্ত্রীর দুর্নীতির কারণে এমপি লিটন হত্যার পটভূমি তৈরি হয়েছিল

স্ত্রীর দুর্নীতির কারণে এমপি লিটন হত্যার পটভূমি তৈরি হয়েছিল



হলি টাইমস রিপোর্ট :
আগামী ৩১ ডিসেম্বর লিটনের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীরা সেই শোকাবহ দিনটি পালনে প্রস্তুতি নিয়েছে। সেই শোক শুধু জনপ্রিয় নেতাকে হারানোই নয় তার স্ত্রীর প্রতি তীব্র ক্ষোভও প্রকাশেরও। খুনি সনাক্ত হলেও নেতাকর্মীরা মনে করেন তার স্ত্রীর দলীয় নেতাকর্মীদের অবহেলা করা, দুর্নীতি,স্বজনপ্রিতীর কারনেই ঘাতকরা লিটনকে খুন করার সাহস ও সুযোগ পেয়েছিল।
এমপি লিটন খুনের ঘটনায় তার স্ত্রী  সৈয়দা খুরশীদ জাহান স্মৃতি ছিলেন ঘসেটি বেগমের ভূমিকায়। গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জের আওয়ামী লীগের প্রায় সকল নেতাকর্মী মনে করেন লিটন খুনের পটভূমি তার স্ত্রী তৈরি করে দিয়েছিল।
কিন্তু কি ভাবে ? সর্বানন্দ ইউনিয়নের একজন আওয়ামী লীগ কর্মী সাব্বির আহমেদ বললেন, দুর্নীতির মহাসাগরে ভাসছিলেন এমপি লিটনের স্ত্রী স্মৃতি। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সরকারি দফতর সব খান থেকেই তিনি ঘুষ খেতেন। কোন কাজ পার্সেন্টিজ ছাড়া হতোনা। এজন্য এমপি লিটনের স্ত্রীকে মিসেস পার্সেন্টিজও ডাকতেন অনেকে। নানা কারনেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন সুন্দরগঞ্জ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সাব্বির আহমেদ জানান, মূলত লিটন হত্যাকান্ডের পটভূমি স্মৃতিই তৈরি করে দিয়েছিল। স্কুলের পিয়ন, শিক্ষক,পুলিশসহ যে কোন নিয়োগে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের কাছ থেকে ৩ থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন স্মৃতি। এরকম প্রায় আড়াইশ নেতাকর্মী বিভিন্ন পদে চাকরির জন্য ঘুষ দিলেও  চাকরী পাননি।  টেন্ডার, টিআর, কাবিখা, বিধবা ভাতা, রেশন, ত্রান সবকিছু থেকেই পার্সেন্টিজ নিত স্মৃতি। আওয়ামী লীগ নেতা হোক আর সরকারি কর্মকর্তা , কোন কাজ করতে হলেই  সেই কাজের টাকার একটি  অংশ অঘোষিত ভাবেই স্মৃতিকে প্রদান করার নিয়ম করে দেওয়া হয়েছিল। কিছু ব্যক্তিগত লোকও  রেখেছিলেন স্মৃতি যারা খাদ্য গুদাম, প্রকৌশল অফিসের মতো বেশ কয়েকটি অফিস থেকে মাসোহারা উঠাতো। বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতিকে টাকার বিনিময়ে টিআর, কাবিখার কাজ দিয়ে দুর্নীতির মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কোন প্রমান না থাকায় লিটন এমপি থাকাকালীন কেউ মুখ খোলেনি। ওই সব ত্যাগী নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে লিটনের কাছ থেকে দূর সরে যায়। গত দুই বছরে অসংখ্য নেতাকে এভাবে প্রতারিত করায় মৃত্যুর শেষের দিকে নেতাকর্মী শূণ্য হয়ে পড়েন তুমুল জনপ্রিয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। ঘাতকরা ওই সুযোগটিই কাজে লাগিয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
হরিপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মঞ্জু। যিনি স্মৃতিকে টাকা দিয়ে একটি প্রকল্পের রাস্তা তৈরির কাজ পেয়েছিলেন। রাস্তা তৈরিও করেছিলেন। কিন্তু কাজের পর তার পাওনা টাকা পাননি। উল্টো দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এরকম ৪ জন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক দুদকের মামলায় ঝুলছেন।
এম এ মঞ্জু জানিয়েছেন, এমপি লিটন একজন সৎ ও নির্লোভ মানুষ। অথচ তার স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি ছিলেন চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। তার দুর্নীতির দায় গিয়ে পড়েছে এমপি লিটনের ওপর। লিটনের অগোচরেই স্মৃতি তার তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে দুর্নীতির মহোৎসব করেছে। এমপি হওয়ার পর সমস্ত নেতাকর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল লিটনকে।  
তিনি অনেকটাই ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, তাকে যেমন স্মৃতি দুদকের দুর্নীতি মামলায় ফাঁসিয়েছে এরকম অসংখ্য নেতাকেও নানা ভাবে হয়রানি করায় কেউ আর লিটনের কাছে ঘিষতো না। এর আগে প্রতিদিন লিটনকে ঘিরে থাকতো  দেড় থেকে দুইশো নেতাকর্মী। যে বাড়ীতে এমপি লিটন খুন হয়েছে ওই বাড়িতেও সব সময় ২০/৩০ জন নেতাকর্মী থাকতো। অথচ শেষের দিকে এমনই নেতাকর্মী শূণ্য হয়ে পড়েন যে, ফাঁকা বাড়িতে একাকে পেয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে লিটনকে।
লিটন কি স্ত্রীর দুর্নীতির বিষয়টি জানতো না ? এমন প্রশ্নের উত্তরে মি. মঞ্জু জানান, তাকে না জানিয়েই ঘুষ খেত স্মৃতি। জানার পরে অসংখ্যবার স্ত্রীকে মারধর করেছে লিটন। মূলত:লিটনকে মদের নেশায় ডুবিয়ে, বিভিন্ন বিল, ডিও লেটারসহ সবধরনের দুই নম্বরি কাজের সই করিয়ে নিত তার স্ত্রী। বিষয়টি অবগত হলেই স্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে ঝগড়া হতো এবং মারধরের ঘটনাও ঘটত। তিনিও এমপি লিটনের অগোচরে কাজ পেতে স্মৃতিকে টাকা দিয়েছিলেন। সেই উদাহরণ টেনেই ওই সব সত্য কথা বলতে দ্বিধা করেননি মি. মঞ্জু।
এমপি লিটন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকলেও তার স্ত্রী চরম দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল, এমন মন্তব্য করেছেন, এমপি লিটনের সাবেক পার্সেনাল সেক্রেটারী (পিএস) ধোপাডাঙা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা সুজা চৌধুরী।এই সুজা  চৌধুরীই পুলিশকে লিটন হত্যাকারীর ক্লু পাইয়ে দিয়েছিলেন। তিনিও স্মৃতির দুর্নীতির শিকারে পরিনত হয়ে দুদকের মামলার ঘানি টানছেন।

এমপি লিটনের  শ্বশুর ত্রানের টিন ও টাকা গ্রহন করছেন। জনৈক ফিরোজ আলমের ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি :
এমপি লিটনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলতে গেলে ছায়া সঙ্গী মি. সুজা চৌধুরী এ প্রতিনিধিকে বলেছেন, লিটন হত্যার পটভূমি তৈরিতে কিভাবে কাজ করেছেন তার স্ত্রী স্মৃতি।
তিনি জানান, রাজনীতির শুরু থেকে লিটন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন। নিজের পকেটের কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই সন্দুরগঞ্জে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করেছেন। তাকে খুনের পরিকল্পনাকারী কর্ণেল (অব:) আব্দুল কাদের এমপি থাকাকালীন যে সব দুর্নীতি করেছেন তার বিরুদ্ধে  সোচ্চার হয়ে ওঠেন লিটন। এতে লিটনের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন কাদের। এছাড়া লিটন এমপি হওয়ার পর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবেও পরিণত হয়।
তিনি জানান, এমপি লিটনের স্ত্রীর দুর্নীতি মূলত লিটনের দুর্নীতিতে পরিনত হয়। নেতাকর্মীদের ক্ষোভ এবং এমপি লিটনের স্ত্রীর দুর্নীতিকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করেন কাদের।
লিটনের স্নেহভাজন সুন্দরগঞ্জ  উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ দপ্তর সম্পাদক চন্দন সরকারকে বিনা কারণে লিটনের বিরাগভাজন করে শত্রুতে পরিণত করে স্মৃতি। এরপরই চন্দন স্মৃতির দুর্নীতির বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ জানাতে থাকে। একসময় চন্দনকে উপজেলা চত্বরে স্মৃতির নির্দেশে বেধরক মারপিটও করা হয়। আব্দুল কাদের ওই চন্দনকেই কাছে টেনে নেয়। চন্দনের ভগ্নিপতি সুবল দাস লিটনের বাড়ীতে রান্না ও দেখাশোনার কাজ করতো। তাকেও স্মৃতি তাড়িয়ে দেয়। প্রতিশোধ নিতে পরে চন্দন ও সুবল কাদেরের ইনফরমার হিসেবে কাজ করে।
স্ত্রী কেন পিএস হলেন তার একটা ব্যাখা দিয়েছেন মি. সুজা চৌধুরী। এমপি লিটনের পিএস ছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই লিটনের স্ত্রী পিএস হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং জোর করেই পিএস হন। এটা নজির বিহীন। দেশে বা বিদেশে কোন সংসদ সদস্যের স্ত্রী তার পার্সোনাল সেক্রেটারী হয়েছে বলে জানা নেই। মূলত:স্মৃতি পিএস হওয়ার পর থেকেই লিটনের নামে দুর্নীতির অভিযোগ বাড়তে থাকে। স্মৃতির তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই বাদল সকল প্রকার চাকরিতে নিয়োগ বদলি,  ছোট ভাই তারেক টেন্ডার চাঁদবাজি আর মেঝ ভাই  বেতার ডিও  লেটারসহ সবধরনের প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনের দায়িত্বে ছিল। মূলত ওই তিন ভাইয়ের মাধ্যমে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছিল স্মৃতি। ঘুনাক্ষরেও টের পায়নি এমপি লিটন। যখন জানতে পেরেছে তখনই শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। স্ত্রী স্মৃতিকে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনও করেছে লিটন।
অনেকটা নয় পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন এই তুমুল জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু কি ভাবে ?
মি. সুজা চৌধুরী  চোখের জল মুছে আদ্র কন্ঠেই জানালেন, শুধু সুন্দরগঞ্জ বা গাইবান্ধা নয়, পুরো উত্তরবঙ্গের আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে সচল রেখেছিলেন লিটন। অকাতরে টাকা ঢেলে নেতাকর্মীদের মামলা মোকাদ্দমা থেকে মুক্তি, ব্যবসা বানিজ্য এবং টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করে এই অঞ্চলে একটা শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ’কে। অথচ এমপি হওয়ার পর তার তার স্ত্রী  দু’একজন ছাড়া সব নেতাকর্মীদের এমপি লিটনের কাছে ভিরতে দিতেননা। নানা অজুহাতে কাছের নেতাদের বিরাগ ভাজন করায় সে। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল অর্থ লিপ্সা। নেতাকর্মীরা কাছে থাকলে সেটা সম্ভব নয় এজন্য ওই জঘণ্য কৌশল নেয় স্মৃতি। এমপি হওয়ার আগে যেখানে লিটনের বাড়ীতে প্রতিদিন এক/দুইশত লোকের খাওয়ার যোগার থাকতো, ২০/৩০ জন  নেতাকর্মী তাকে ঘিরে থাকতো, সেই প্রিয় নেতা একদমই একাকী হয়ে গিয়েছিল। বিকেল বেলা এবং সন্ধ্যায় তার কাছে কেউই থাকতো না।নির্জন ওই বাড়ীতে শ্যালকরা ছাড়া প্রায় সব নেতাকর্মীর আসা যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল স্মৃতি।
কিন্তু কেন এমন করতেন তার স্ত্রী। এর একটি ব্যাখাও দিয়েছেন এই ছায়া সঙ্গি। তিনি অকপটেই বলেছেন, লিটনের মদ খাওয়ার অভ্যাস ছিল। তিনি যখন পিএস ছিলেন তখন সপ্তাহে একদিন মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করতেন। পরে লাগামহীন মদ খেতেন বলে তিনি শুনেছেন। তিনি এবং কয়েকজন প্রতিবেশিও বলেছেন, বিকেল বেলা নয়তো রাতে স্ত্রী স্মৃতিই লিটনকে বেশি বেশি মদ খাইয়ে মাতাল করতেন। তার শ্যালকেরাই মদের সাপ্লাই দিতেন। লিটনকে মাতাল করেই সব ধরনের ডিও লেটার,এবং অফিসিয়াল বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করিয়ে নিতেন। এভাবেই লিটনকে স্মৃতিভ্রংশ করে পাহার সমান দুর্নীতি করেছে তার স্ত্রী। পরে যখন বিভিন্ন অফিস, গোয়েন্দা সংস্থা লিটনকে ফোন করতেন, জোরালো ভাবে অস্বীকার করার পর ডিও লেটারে স্বাক্ষর দেখে চমকে উঠতেন তিনি । পরে বাড়ীতে এসে নির্যাতন করতেন স্ত্রীকে। কিন্তু এতো কিছুর পরও থামাতে পারেননি স্ত্রীকে। শ্যালক এবং স্ত্রীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন লিটন।
তার ছোট শ্যালক বেতার হোসেন, যার বিরুদ্ধে জনবিচ্ছিন্ন করার বড় অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীরা। সেই বেতারও স্বীকার করেছেন, নেতাকর্মীদের দূরে রাখার বিষয়টি। বেতার বলেছেন, সন্ধ্যায় এমপি লিটন অফিসিয়াল কাজ করতেন বাড়ীতে বসে। এজন্য বিকেল থেকেই নেতাকর্মীদের বাড়ীতে আসতে নিষেধ করেছিল তার বোন। যে মুর্হুতে লিটন গুলিতে ঝাঁঝরা হচ্ছিলো তখনও সে ও তার বোন স্মৃতি পাশের রুমে ডিও লেটার তৈরির কাজ করছিলেন। ৭টি গুলি ফুটেছিল, যার মধ্যে ৫টি লিটনকে বিদ্ধ করে। দরজার ওপাশে বসে এতো ডিও লেটার তৈরির কাজে মশগুল ছিলেন ভাই বোনে যে গুলির শব্দকেও পাত্তা দেননি। এমনকি গুলি লাগার পর লিটন ভিতরের উঠোনে গিয়ে চিৎকার করে স্ত্রীর নাম ধরে ডেকেছিলেন । তাও তাদের কানে যায়নি। বেতার বললেন , তারা ভেবেছেন কাউকে হয়তো চড় থাপ্পর দিচ্ছেন। পরে চিৎকার শুনে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ লিটনকে দেখতে পান। এমপি লিটন খুনের পরিকল্পনাকারী এবং খুনিরা সনাক্ত হলেও সেদিন স্ত্রী স্মৃতি এবং তার শ্যালকের ওই ভূমিকা নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়েছে নেতাকর্মীদের মনে।
সুন্দরগঞ্জ আওয়ামী প্রজন্ম লীগের সাবেক সভাপতি সুজন চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেছেন, স্মৃতি মূলত ঘসেটি বেগমে পরিণত হয়েছিল। তিনভাইকে নিয়ে পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল লিটনকে। ওই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে খুনিরা। তিনি অনেকটাই আক্ষেপ করে বলেন, যেখানে বামনডাঙা দলীয় অফিসে  নেতা এলেই দুই তিনশো লোকের ভিড় জমতো, বাড়ীতে সব সময় নেতাকর্মীর আনাগোনা থাকতো সেই নেতার অফিস ফাঁকা থাকে, বাড়ীতে নেতা একা থাকলেও কেউ যায়না। এর জন্য পুরোই দায়ী ছিল তার স্ত্রী।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গেই বলেন, এমপি লিটনের স্ত্রীর দুর্নীতির বড় শিকারই হয়েছেন শতশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। তারা এমপির পাশ থেকে সড়ে যাওয়ার পরেই তাকে খুন করার পরিকল্পনাকারীরা সফল হয়েছে। পরোক্ষভাবে এই খুনের দায়ভার তার স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি এড়াতে পারেন না বলে মনে করেন তিনি।
মাস্টারপাড়ায় লিটনের বাড়ীর পাশের প্রতিবেশি আশরাফুলেরও একই অভিযোগ। তার মতে, খুনের সঙ্গে হয়তো স্মৃতি জড়িত নয়। তবে খুনের পটভূমি তার হাতেই  তৈরি ।
তিনি জানান, দুর্নীতি করে লিটনের কোনো  সম্পদ করেননি স্মৃতি। তার বাপের বাড়ি বিল্ডিং করেছেন, ভাইরা আগে যেখানে বাঁশের সাচের বেড়া ঘরে থাকতো এখন দালান উঠেছে, বিপুল অঙ্কের টাকা হয়েছে তাদের। সে নিজের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়িয়েছে। দুর্নীতি করে তার যে অর্থলাভ হয়েছে তার চেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে  জনপ্রিয় নেতা স্বামী লিটনকে চিরতরে হারানো।  ক্ষোভে তিনি স্মৃতির নামই মুখে নিতে চাইছিলেন না।
তবে স্মৃতি এসব অভিযোগ মানতে নারাজ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি মতামত দিলেও বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত এমপি লিটনই নিয়েছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন । চাকরি দেওয়ার নাম করে  দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে কোন ঘুষ নেননি। তবে কয়েকজনকে কেন টাকা ফেরত দিয়েছেন সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারেননি। উল্টো বলেছেন, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে । দুর্নাম রটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এমপি লিটন তার স্বামী । তাকে হত্যার পটভূমি তৈরি করার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। কোন একটি  মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে । স্মৃতি দাবি করেন, সুন্দরগঞ্জের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে আছেন।





 



Comments

Place for Advertizement
Add