হলি টাইমস রিপোর্ট :
ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে আমাদের দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো অনেক সময় ভীতির কারণ হলেও দিন দিন এর পরিবর্তন ঘটছে। এখন পর্যটকদের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে পর্যটক পুলিশ। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের নিরাপত্তা দেয়ার পাশাপাশি নানা প্রতারণা থেকেও রক্ষা করছে পর্যটন পুলিশ। কিন্তু অনেকেই জানেন না প্রতারিত হলে কি করবেন। এজন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে পর্যটন পুলিশ।
কক্সবাজারে প্রফেশনাল এক ফটোগ্রাফারকে প্রতারণার জন্য গত বুধবার শাস্তি দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সোমবার কক্সবাজারে প্রতারকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে তা ফেরত দেয়া হয়।
জানা গেছে, কক্সবাজারে জাকি মোহাম্মদ শাহরিয়ার নামে এক পর্যটক ফটোগ্রাফার আরমানের প্রতারণার শিকার হন। ফটোগ্রাফার আরমানের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন, ৮৪টি ছবির মধ্যে ৫০টি ছবি ডাবল প্রিন্ট করে তার ১৬৮০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার জোনের সিনিয়র এএসপি রায়হান কাজেমীর কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করার পর ফটোগ্রাফার আরমানকে ট্যুরিস্ট পুলিশ অফিসে নিয়ে আসেন এবং ৩২টি ছবি ডাবল প্রিন্টের প্রমাণ পান। তখনই ফটোগ্রাফার আরমান অভিযোগকারীকে ৩২টি ডাবল ছবির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬৪০ টাকা ফেরত দেন। পরে অভিযোগকারীর প্রাইভেসি রক্ষার্থে ৩২টি ডাবল ছবি পুড়িয়ে ফেলা হয়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাকি মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ঝামেলার কারণে আমি জিডি করিনি। তবে পুলিশ এমন তৎপর হবে ভাবিনি। আশা করি তারা প্রতারণার দিকটি বিবেচনা করে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার চৌরঙ্গী মোড়ের বাসিন্দা তানভির আহম্মদ তম্ময় (২০) কক্সবাজারে গিয়ে সোমবার এক প্রতারকের খপ্পরে পড়েন। বন্ধুবেশে একজন তার মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়। পরে পর্যটক পুলিশ মোবাইলটি উদ্ধার করলেও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে তানভির আহম্মদ তম্ময় বলেন, গত বছর কক্সবাজারে বাণিজ্য মেলায় মিজানুর রহমানের (২৫) সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়।
ফেসবুকে এবং মোবাইলে মাঝে মাঝে কথা হতো। রোববার সকালে মিজানুর রহমান তম্ময়কে বেড়ানোর কথা বলে লাইট হাউজ এলাকায় নিয়ে যায়। একটি কটেজে গিয়ে রেস্ট করার কথা বলে কটেজের পেছন দিয়ে তম্ময়ের মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
বেলা ১১টার দিকে ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি রায়হান কাজেমীকে বিষয়টি জানালে তিনি কুইক রেসপন্স টিমকে অভিযানে পাঠান। লাইট হাউজ এলাকায় প্রতারক মিজানুর রহমানের খোঁজে ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে হোটেল সিলভার শাইনের বিউটি পার্লার থেকে তম্ময়ের স্যামসং জে-২ মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে সিনিয়র এএসপি রায়হান কাজেমী বলেন, মিজানুরের বাবার নাম লিয়াকত আলী। কক্সবাজারের নয়াপাড়ার পিএমখালীতে থাকে। প্রতারকের বাসায় অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। যেহেতু তার ছবি ও ঠিকানা পাওয়া গেছে, অবশ্যই গ্রেফতার করা যাবে।
তিনি আরো জানান, পর্যটকরা যেকোনো মানুষের কাছ থেকে প্রতারিত হলে অবশ্যই আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব। যানবাহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট কিংবা কেনাকাটাসহ যাই হোক না কেন প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের হয়ে কাজ করা আমাদের দায়িত্ব।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত এসপি মো. নজমুল হোসেন (ক্রাইম এন্ড অপস) বলেন, পর্যটন স্পটে কেউ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লে ডাকাত চোর কিংবা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে ফোন করুন ট্যুরিস্ট পুলিশের হেল্প ডেস্কে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য আমাদের রয়েছে হেল্প ডেস্ক ০১৭৬৯৬৯০৭৪০ নাম্বারে কল করে যেকোনো পর্যটক পেতে পারেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতা।