Contact For add

Sun, Sep 17 2017 - 10:15:16 AM +06 প্রচ্ছদ >> জাতীয়

The description of the torture of a Rohingyaএকজন রোহিঙ্গার নির্যাতনের বর্ননা

একজন রোহিঙ্গার নির্যাতনের বর্ননা

হলি টাইমস রিপোর্ট :

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার কারণে কয়েক লক্ষ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। আব্দুল আজিজ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কাছে নির্যাতনের শিকার হন। বিবিসি বাংলার ফারহানা পারভীনের কাছে বর্ণনা করেছেন সেখানকার পরিস্থিতি এবং নির্যাতনের কথা। আব্দুল আজিজের কথা হবহু বর্ণনা করা হল।

সেদিন ছিল বুধবার । বিকেলে আসরের নামাজ পড়তে বের হয়েছি। সেসময় আমাকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

আমার বাড়ী রাখাইনের গারোতো বিলে। বাড়ি থেকে চোখ বেধে নিয়ে যায়, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কিছু্‌ই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

চোখ খুললে বুঝতে পারলাম আমাকে একটা 'গ্যারানের টেরায়' যাকে বলা হয় 'গোয়াল ঘরে' নিয়ে রাখা হয়েছে।

দেখলাম ঘরভর্তি মানুষ। আমার মতই তাদেরকেও ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।

সেখানে আমাদেরকে নিয়ে গরুর রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে ।

যখন বেঁধে রেখেছিল তখন দুইজন পাহারা দিয়েছে, কারোর বের হওয়ার সুযোগ ছিল না ।

প্রচণ্ড মারধোর করে আমাকে। তারা মিয়ানমারে ভাষায় বলছিলো "লো কালা" অর্থাৎ তোরা আমাদের দেশি না, তোরা বাঙ্গালি, তোরা ওখানেই চলে যা।

আমার সামনে কয়েকজনকে জবাই করছে আবার কাউকে কাউকে গুলি করে মেরেছে।

টেকনাফে বিবিসি বাংলার ফারহানা পারভীনের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।

গুলি মারার পর তখনো যদি সে নড়তে থাকে তাহলে তাকে জবাই করে দেয়।

পাহারাদাররা যখন দরজা থেকে সরে গেছে তখন তাদের অবস্থান দেখে আমি পালিয়ে আসি ।

আমাকে ধরে নিয়ে গেছিলো আসরের সময় আর আমি পালিয়ে আসি এশার সময় ।

আমি যখন ওইখান থেকে বের হয়ে আসি তখন যাদেরকে তখনো হত্যা করেনি তাদের সবার হাত পা বাঁধা ছিল।

এর পর কি করেছে আমি জানি না । আমি যখন এসেছি তখনো ঐখানে অনেক মানুষ ছিল, শুধু ছিল পুরুষ মুসলিম, কোন মহিলা ছিল না ।

আমি যখন বাড়ি ফিরে আসি তখন দেখি আমার ঘর আগে যেরকম ছিল সেরকম আর নেই ।

আমার বাড়ি বোমা মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছে নাকি ম্যাচের আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছে সেটা আমি জানি না, কিন্তু আমার প্রতিবেশীরা বলেছে বোমা মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছে ।

এর পর থেকে আমার মা বাবার সাথে দেখা হয়নি, বাংলাদেশে এসেও তাদের খোঁজ পাইনি ।

ওখানে মুসলিমের কোন দাম নাই, খাবার পানি দেয় নরা। ভয়ে আতঙ্কে আমার গলা শুকিয়ে আসছিল।

বন্দি অবস্থায় দুই আড়াই ঘণ্টা ছিলাম তখন অন্যদের জিজ্ঞাসা করেছি এখানে কোন খাবার পানি দেয় কিনা, তারা বলেছে কোন খাবার বা পানি দেয় না ।

ঐখানে আমার মতো যুবক যারা ছিল তাদেরকে আগেই ধরে নিয়ে গেছে, তাদেরকে মেরে ফেলেছে, কেটে ফেলেছে । এর পরে ওখানে বেঁধে রাখা কতগুলো আছে ।

ওখানে যুদ্ধ করছে এমন কোন রোহিঙ্গা আমরা পাইনি । ওখানে যুদ্ধ করার মতো লোক আছে বলে আমার মনে হয়না ।



Comments

Place for Advertizement
Add