Contact For add

Tue, Jan 16 2018 - 6:24:10 PM UTC প্রচ্ছদ >> প্রবাস

300 Rohingyas going to Myanmar every dayপ্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গা যাবে মিয়ানমার

প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গা যাবে মিয়ানমার

হলি টাইমস রিপোর্ট :

 

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের একটি চুক্তি সই করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে মিয়ানমার। অর্থাৎ সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন।

তিনমাস পর এই সংখ্যা পুনরায় পর্যালোচনা করে বাড়ানো হবে।

যেদিন থেকে যাওয়া শুরু হবে, তার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ হবে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন।

সোমবার থেকে 'ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট' নামের ওই চুক্তিটির বিষয়ে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে আলোচনা শুরু হয়। খবর : বিবিসির

মঙ্গলবার সকালে চুক্তিটি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে মোঃ. শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পক্ষে মিন্ট থোয়ে স্বাক্ষর করেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, যেকোন প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছামূলকভাবে হতে হবে এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিদিন ৩০০ জন রোহিঙ্গা ফেরত যাবে

চুক্তি সাক্ষরের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ. শহিদুল হক বিবিসিকে বলছেন, ''চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৩০০জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে।''

তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর দাবি করেছিল। কিন্তু মিয়ানমার সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। তিনমাস পরে পর্যালোচনা করে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।

''বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গারা রয়েছেন, তাদের কিভাবে ফেরত আনা হবে, কোন রুট দিয়ে হবে, কোন কোন জায়গায় তাদের রাখা হবে, মিয়ানমারে যাবার পর তাদের কোথায় নেয়া হবে, নিরাপত্তা, বাড়িঘরের কি হবে, কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'' বলছেন মি. হক।

চুক্তিটিতে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এবং রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে যে বিপুল সংখ্যায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে, এত কম সংখ্যায় তাদের ফেরত পাঠানো হলে সেটি তো দীর্ঘ সময় নেবে। সেটা স্বীকার করে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলছেন, ''এ ধরণের অবস্থায় এ ধরণের প্রত্যাবাসন এভাবেই হয়। কারণ আমরা সবকিছু চাইতে পারিনা। আমরা তাদের নিরাপত্তার কথাও বলবো, আবার আমরা চাইবো যে একসঙ্গে সবাইকে পাঠিয়ে দেবো, ওরা এখনি তা দিতে পারছে না। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো, আমরা এখানে একটি ধারা রেখেছি, যেখানে বলা আছে যেদিন থেকে (রোহিঙ্গাদের) যাওয়া শুরু হবে, সেদিন থেকে দুই বছরের মধ্যে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ হবে।''

তিনি বলছেন, ''প্রথমে অল্প করে যাওয়া শুরু হবে, পরে এই সংখ্যা বাড়বে।''

কিন্তু কবে থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া শুরু হবে, সেটি তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, ''পদ্ধতি শুরু হয়েছে, এখন দ্রুততম সময়ে তাদের যাওয়া শুরু হবে।''

প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্তির জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে। যারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেন, তাদের এই ফরমটি পূরণ করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গত ২৩শে নভেম্বর ২০১৭ তারিখে একটি সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। যাকে ''অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অফ ডিসপ্লেসড পারসনস ফ্রম রাখাইন স্টেট'' বা রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষদের ফিরিয়ে আনার সমঝোতা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।

কিভাবে ফেরত পাঠানো হবে

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই দেশের সম্মতিতে একটি ফরম পূরণ, যাচাই বাছাইয়ের পর প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের বাছাই করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবারকে একটি ইউনিট বলে বিবেচনা করা হবে।

এই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপন করবে, যেখান দিয়ে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। অন্যদিকে মিয়ানমার অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন করবে, যেখানে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের প্রথমে রাখা হবে। হালা পাও খুঙে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেবে মিয়ানমার। এই সময়ে তাদের বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করে দেয়া হবে।

যে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা এখন দুই দেশের সীমান্তে জিরো পয়েন্টে রয়েছে, তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি মিয়ানমার সবার আগে বিবেচনা করবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

দুইটি যৌথ কমিটি পুরো কার্যকলাপ নজরদারি করবে। এর একটি কমিটি যাচাই বাছাই কাজ তদারকি করবে, অন্যটি কমিটি প্রত্যাবাসনের বিষয়টি দেখভাল করবে।



Comments