সংসদ প্রতিবেদক :

আমাদের ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। যানজটমুক্ত করতে নানামুখি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কনসালটেন্ট নিয়োগ দিয়েছি। তারাও পথ বের করতে চেষ্টা করছেন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মহানগরী যানজটমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৭১ বিধিতে জরুরি-গুরুত্বসম্পন্ন বিষয়ে আনিত নোটিশের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নোটিশ দেন নূরজাহান বেগম। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় প্রতিদিন ৩৭১টি নতুন গাড়ি নামছে, যার সিংহভাগই ব্যক্তিগত। কিন্তু রাস্তা তততটা বাড়ছে না।
নোটিশে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট (বিআইও) এর  গবেষণা তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, যানজটের কারণে বাংলাদেশে বছরে যে কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়, তার মূল্য ৪৩ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। এছাড়া উৎপাদন খাতে আর্থিক ক্ষতি ৩০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। আর স্বাস্থ্যখাতে ২১ হাজার ৯১৮ কোটি, জ্বালানি ও যানবাহন মেরামত বাবদ ১ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপি’র প্রায় ৭ শতাংশ।
নোটিশের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তিনি যথার্থই বলেছেন, প্রতিদিন ৩৭১টি নতুন গাড়ি রাজধানীতে নামছে বা রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। আমরা বলেছিলাম রাজধানীকে যানজটমুক্ত করবো। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, শুধু ঢাকা শহর নয়, সারাদেশে আমাদের রাস্তা আছে মাত্র ৮ শতাংশ, অথচ থাকা উচিত ২৫ শতাংশ। সারাদেশ থেকে মানুষ ঢাকায় চলে আসে। বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এবং সকালে কিছু আসে রাতে চলে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক। রাস্তা বৃদ্ধির জন্য আমরা বিভিন্ন প্রকল্প নিচ্ছি এবং নিয়েছি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ঢাকা মহানগরীতে যানচলাচল নির্বিঘ্নেকরার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে এমআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিভিন্ন সড়কে ফ্লাইওভার ওভারপাস, ইউলুপ, একমুখী চলাচল ব্যবস্থা, ফুটপাতে অবৈধ দখলমুক্তকরণ, মোবাইলকোর্ট পরিচালনা, সড়ক প্রশস্থকরণ, অটোমেটিক ট্রাফিক সিগনাল ব্যবস্থা। এসব পদক্ষেপ একযোগে বাস্তবায়ন করতে পারলে মহানগরী যানজটমুক্ত হবে, গাড়ি চলাচলে গতি  আসবে।
তিনি বলেন, এছাড়া আমরা কনসালটেন্ট নিয়োগ করেছি, ঢাকা মহানগরীকে কিভাবে সিগনালিংয়ের আওতায় এনে নিরাপত্তা দেওয়া যায়।
ট্রাফিক পুলিশ পুরস্কার পাওয়ার আসায় অতিরিক্ত মামলা দিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতা করে মামলা দিচ্ছে তথ্যটি সঠিক নয়। এমনটি হলে একটির পর একটি গাড়ি লাইনে দাঁড়িয়ে যানজটের আরেকটি যানজট সৃষ্টি হতো। অকারণে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে মামলা হয় না। তবে দুই একটা যে হয় না সেটাও বলছি না। ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি  দেখছেন।