Contact For add

Thu, Sep 14 2017 - 2:49:16 PM +06 প্রচ্ছদ >> অপরাধ

Father sold son and bought wine and mobileছেলেকে বিক্রি করে মদ আর মোবাইল কিনলো বাবা

ছেলেকে বিক্রি করে মদ আর মোবাইল কিনলো বাবা

হলি টাইমস রিপোর্ট :

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে।

এক ব্যক্তি নিজের এক বছর বয়সী পুত্র সন্তানকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে।

ছেলেকে বিক্রি করে দিয়ে যে টাকা ওই ব্যক্তি পেয়েছিল, তা দিয়ে একটি মোবাইল ফোন, কিছু গয়না আর জামাকাপড় কেনে সে।

তারপরেও যে টাকা বাকি ছিল, তা দিয়ে মদ কেনে পান্ডিয়া মুখী নামের ওই ব্যক্তি।

ওড়িশার ভদ্রক জেলার এই ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।

মি. মুখী এবং তাঁর প্রতিবেশী ও আত্মীয় বলরাম মুখীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।

জেরার মুখে মি: পান্ডিয়া পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে সে তার শিশু পুত্রকে বিক্রি করে দিয়েছে। কিন্তু শুধুই অর্থের জন্য নয়, ছেলের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই সে ওই কাজ করেছে বলে তার দাবী।

তবে তার প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে যে ঝাড়ুদারের কাজ করা পান্ডিয়া মদে আসক্ত আর সেই পয়সা যোগাড় করতেই এই জঘন্য কাজ সে করেছে বলেই পাড়া পড়শীদের মত।

শিশু বিক্রির কাজে মধ্যস্থতা করার দায়ে একজন অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ভারতে অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রগুলি হল সরকারী অর্থে পরিচালিত শিশু বিকাশ কেন্দ্র।

বিক্রি হয়ে যাওয়া শিশুটিকে সরকারী কর্মকর্তারা তার মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে।

ভদ্রক জেলার পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট অনুপ সাহু বিবিসিকে জানিয়েছেন, "মঙ্গলবার পান্ডিয়া আর বলরামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। দুজনকেই জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

বাচ্চাটির মা এবং শিশু - দুজনকেই একটি সরকারি হোমে রাখা হয়েছে। ওই অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীও যে এর মধ্যে জড়িত, সেই প্রমাণও আমরা পেয়েছি।"

শিশুকে নিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটছবির কপিরাইটCHARUDUTTA NAYAK

পুলিশ বলছে, জেরার মুখে অপরাধীরা জানিয়েছে বছর কয়েক আগে এক দুর্ঘটনায় নিজের একমাত্র শিশু সন্তানকে হারান সোমনাথ শেঠি নামের এক ব্যক্তি। একটি শিশুকে পাওয়ার জন্য ওই অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীকে ৪৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন শেঠি। সেই টাকা থেকেই ওই কর্মী ২৫ হাজার টাকা পান্ডিয়াকে দেন তার ছেলের দাম হিসেবে।

জেলার শিশু সহায়তা কেন্দ্র জানিয়েছে তারা এক নাগরিকের কাছ থেকে টেলিফোনে এই শিশু বিক্রির ঘটনা জানতে পারেন। তারপরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

শিশুটির মা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন যে তাঁকে মিথ্যা কথা বলে তারঁর স্বামী শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছিল।

বারে বারেই তার স্বামী স্ত্রীকে শুনিয়েছে যে ছেলে ভাল জায়গায় আছে।

কিন্তু মায়ের সন্দেহ বাড়ে যখন পান্ডিয়া তার জন্য গয়না আর নিজের জন্য মোবাইল ফোন কিনে আনে।

স্বামী জেলে যাওয়ায় কোনও আক্ষেপ নেই শিশুটির মা বর্ষার।

শিশুর মা জানিয়েছেন, "আমি যে করেই হোক সন্তানকে বড় করবো। কিন্তু আমার স্বামী যা করেছে, তার জন্য কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার তার।"

অর্থের জন্য বাবা মায়েরা নিজেদের সন্তানকে বিক্রি করে দিচ্ছে, এরকম ঘটনা প্রায়ই সামনে আসে।

 

ওই শিশু ও তার মাছবির কপিরাইটCHARUDUTTA NAYAK
Image captionশিশুর মা জানিয়েছেন, "আমি যে করেই হোক সন্তানকে বড় করবো। কিন্তু আমার স্বামী যা করেছে, তার জন্য কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার তার।"

গত মে মাসে ত্রিপুরার এক গরীব আদিবাসী নারী তার সন্তানকে মাত্র দুশো টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

ত্রিপুরারই আরেকটি ঘটনা জানা গিয়েছিল বছর দুয়েক আগে, যেখানে এক দম্পতি সদ্যজাত সন্তানকে সাড়ে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন এক গরীব দম্পতি।

কয়েক বছর আগে ওড়িশা রাজ্যেরই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল, যেখানে দেড় বছরের ছেলেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন তার মা।

সেই অর্থে নিজের জন্য একটা মোবাইল ফোন, দুটি জিন্সের প্যান্ট সহ আরও কিছু কেনাকাটা করেছিলেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েক মাস আগে এক বড় শিশু পাচার চক্রের হদিশ পাওয়া যায়, যেখানে সদ্যজাত শিশুদের নার্সিং হোম বা হাসপাতাল থেকেই অর্থের বিনিময়ে পাচার করে দেওয়া হত।

ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন ডাক্তার, সরকারি আধিকারিক, রাজনৈতিক নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন।



Comments

Place for Advertizement
Add